হত্যার আগে নিশ্চল করা হয় ফাহিমকে, বাসায় মিলল করাত

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনে নিজের অভিজাত বাসায় খুন হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ। তাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তার ব্যক্তিগত সহকারী টাইরিস ডেভন হাসপিলকে।

এদিকে, ফাহিম সালেহ হত্যার ঘটনায় তার বাসায় একটি ইলেকট্রিক করাত পাওয়া গেছে। যেটি কিনেছিলেন গ্রেফতার হওয়া টাইরিস ডেভন হাসপিল। গোয়েন্দারা বলছেন, হত্যার আগে বৈদ্যুতিক টেজার গান দিয়ে ফাহিমকে নিশ্চল করা হয়েছিল।

শনিবার সন্দেহভাজন খুনি হাসপিলের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট ও সিএনএনের।
এদিন হাসপিলকে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ম্যানহাটনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি লিন্ডা ফোর্ড হাসপিলকে আদালতে উপস্থাপন করে বলেন, হোমডিপো নামের দোকান থেকে হাসপিলের কেনা ইলেকট্রিক করাত ও ধোয়ামোছার সরঞ্জামাদি ফাহিম সালেহর অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া গেছে।

অ্যাটর্নি লিন্ডা ফোর্ড ভিডিও কনফারেন্সে আদালতকে আরও বলেন, সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যাওয়া সন্দেহভাজন খুনির পোশাক হাসপিলের ব্রুকলিনের বাড়িতে পাওয়া গেছে। এছাড়া নিউ ইয়র্ক পুলিশের তদন্ত দল হাসপিলকে প্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্ত করতে পেরেছে।

ফাহিম সালেহের হত্যার সঙ্গে হাসপিলের জড়িত থাকার জোরালো প্রমাণ আছে উল্লেখ করে অ্যাটর্নি লিন্ডা বলেন, অপরাধ সংঘটনের আগে ও পরের সার্ভিল্যান্স ভিডিও থেকে অন্তত দু’জন শনাক্তকারী হাসপিলকে শনাক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, হাসপিল তরুণ প্রযুক্তিবিদ ফাহিম সালেহের অন্তত ৯০ হাজার মার্কিন ডলার চুরি করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশ বা আইনি আশ্রয়ে না গিয়ে সালেহ কিস্তিতে অর্থ ফেরত দেওয়ার সুবিধা করে দিয়েছিলেন।

শুক্রবার হাসপিল গ্রেফতার হওয়ার পর নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান রডনি হ্যারিসনও সাংবাদিকদের একই রকম তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুক্তভোগীর (ফাহিম সালেহ) আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর তত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে অভিযুক্তের কাছে ভুক্তিভোগী বড় অঙ্কের অর্থ পেতেন।

এদিকে রডনি হ্যারিসনকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন জানায়, সোমবার দুপুরে সালেহকে হত্যা করার আগে হাসপিল তাকে বৈদ্যুতিক টেজার গান দিয়ে নিশ্চল করে।

এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং নিউ ইয়র্ক পোস্টের খবর অনুযায়ী, ফাহিমকে খুন করার পর গাড়ি ভাড়া করে ম্যানহাটনের একটি দোকানে যান হাসপিল, যেখান থেকে তিনি অ্যাপার্টমেন্ট পরিষ্কার করার জিনিসপত্র কেনেন। এই সময় হাসপিল ফাহিমের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গাড়ি ভাড়া দেন। পরেরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার, হসপিল ফাহিম সালেহর অ্যাপার্টমেন্টে যান হত্যার আলামত মুছে ফেলার উদ্দেশে।

১৪ জুলাই বিকালে নিউ ইয়র্ক নগরের ম্যানহাটনে নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ফাহিম সালেহের খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।