যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৮ কিশোরের সম্পৃক্তা রয়েছে

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর হত্যা ও ১৫ জন আহতের ঘটনায় শোন এ্যারেস্টে থাকা ৮ কিশোরকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ৪ দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে ৮ কিশোরের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এদিকে আহত ১৫ জনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া ফাঁড়ির পরিদর্শক রকিবুজ্জামান জানান, শোন এ্যারেস্টে থাকা ৮ কিশোরকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ৪ দিনের জিজ্ঞাসাবাদ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) শেষ হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গত ২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আসামি ৮ বন্দি কিশোরকে চারদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদেশ দেন। সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রের ভেতর আলাদা কক্ষে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৯ আগস্ট শনিবার থেকে কেন্দ্রের ভেতর গিয়ে মামলার আসামি ৮ বন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কখনো একজনকে একাকি আবার কয়েকজনকে এক সাথে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি। তবে ৮ বন্দির কাছ থেকে কী তথ্য পাওয়া গেছে তা প্রকাশ করতে অপরাগতা জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এদিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের মারপিটের ঘটনায় আহত ১৫ জনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি নেয়ার জন্য মঙ্গলবার (১ সেপ্টম্বর) জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুদ্দিন হুসাইনের আদালতে আবেদন করা হয়েছে। তবে আদলত কোন আদেশ দেয়নি বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া ফাঁড়ির পরিদর্শক রকিবুজ্জামান। আহত ১৫ কিশোর হচ্ছে জাবেদ, লিমন, আরমান, হৃদয়, সাকিব, ইশান, পাভেল, সাইম, ছাব্বির, সফিকুল, রাকিব, মাহিম, রুপক,হৃদয়-২, ও জুয়েল।

গত ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের নির্যাতনে ৩ কিশোর নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। এই ঘটনার পর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তারা বলেন, কেন্দ্রের শিশু কিশোরদের দু’টি গ্রুপের মধ্যে মারামারিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরে আহত কিশোরদের বক্তব্য ও পুলিশের তদন্তে স্পষ্ট হতে থাকে যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দয় মারপিটের কারণেই তিন কিশোর নিহত ও ১৫ কিশোর আহত হয়।

পরের দিন ১৪ আগস্ট নিহত কিশোর রাব্বির পিতা রোকা মিয়া বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অজ্ঞাত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করে। ঘটনা তদন্তে ২টি কমিটি গঠন করে সরকার। এরমধ্যে সমাজসেবা অধিদফতর ইতোমধ্যে তাদের তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয় ৩ সদস্য বিশিষ্ট যে কমিটি গঠন করেছে তারাও যশোরে কাজ শুরু করেছেন।