ফোনালাপে পুতিনকে ‘সতর্ক’ করলেন বাইডেন

মঙ্গলবারের ওই ফোনালাপে রাশিয়ায় সরকার বিরোধীদের চলমান প্রতিবাদ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে টিকে থাকা সর্বশেষ পরমাণু অস্ত্র চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো নিয়েও দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

পুতিন, নির্বাচনে জয়লাভ করায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে রাশিয়ার বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

উভয় পক্ষ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারেও একমত হয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

সিরিয়া, ইউক্রেইনসহ অসংখ্য ইস্যুতে মস্কো ও ওয়াশিংটন বিপরীত শিবিরে থাকলেও বাইডেনের আগের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া নিয়ে তার নিজের প্রশাসনের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রায়ই অগ্রাহ্য করতেন। তার বিরুদ্ধে পুতিনের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত শ্রদ্ধাবনত থাকারও অভিযোগ ছিল।

রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল, পূর্ব ইউক্রেইনে আগ্রাসন এবং সিরিয়ায় শক্তি প্রদর্শনে ক্রেমলিনকে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ব্যর্থতা নিয়েও অনেক সমালোচনা আছে। ওবামার আমলে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

“রাশিয়ার কর্মকাণ্ড যা আমাদের কিংবা আমাদের মিত্রদের জন্য ক্ষতিকর সেগুলোর প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন,” পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে এমনটাই বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার দুই নেতার কথোপকথনে সোলার উইন্ড সাইবার হামলা, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা হত্যায় ক্রেমলিনের পুরস্কার ঠিক করে দেওয়া এবং রাশিয়ার সরকারবিরোধী রাজনীতিক অ্যালেক্সি নাভালনিকে বিষপ্রয়োগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

দুই নেতার ফোনালাপে মস্কো-ওয়াশিংটন দ্বন্দ্বের যেসব প্রসঙ্গ বাইডেন তুলেছেন বলে হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, ক্রেমলিনের বিবৃতিতে তার কোনোটিরই উল্লেখ নেই বলে জানিয়েছে বিবিসি।

রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে তা দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ভূমিকা রাখবে বলে প্রেসিডেন্ট পুতিন উল্লেখ করেছেন।

“সামগ্রিক বিচারে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই নেতার আলোচনা ছিল অকপট ও যথোপযুক্ত,” বলা হয়েছে ক্রেমলিনের বিবৃতিতে।

বাইডেন ও পুতিন সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ‘নিউ স্টার্টের’ (স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশন ট্রিটি) মেয়াদ বাড়াতে একটি চুক্তি করতে যাচ্ছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

ওবামা আমলে হওয়া ওই চুক্তিতে দুই দেশের অস্ত্রভাণ্ডারে পারমাণবিক ওয়ারহেড, ক্ষেপণাস্ত্র ও লঞ্চারের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল।

আগামী মাসেই ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তিটির চলতি মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে; ট্রাম্প এই পরমাণু অস্ত্র চুক্তিটির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।