ডা. সাবরিনাকে জামিন দেয়নি আদালত

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে জামিন দেয়নি মহানগর দায়রা জজ আদালত।

সিএমএম আদালতের জামিন নামঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে এই আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট প্রণব কান্তি ভৌমিক এই জামিনের আবেদন করেন।

সোমবার ওই আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করেন।

সাবরিনাসহ আটজনের প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির এই মামলাটি ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। মামলাটিতে এখন পর্যন্ত ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, ডা. সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরী, আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা আক্তার পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস ওরফে বিপুল দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা রুমা।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, এ মামলায় গত ২২ জুন জেকেজির সাবেক গ্রাফিক্স ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশ। হিরু স্বীকারোক্তি দিয়ে জানান, তিনি ভুয়া করোনা সার্টিফিকেটের ডিজাইন তৈরি করতেন। যার সাথে জেকেজি গ্রুপের লোকজন জড়িত। ওই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুলসহ চারজনকে আটক করে। সিইওকে জানান, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর জ্ঞাতনারেই সব কিছু হয়েছে।

এরপর গত ১২ জুলাই ডা. সাবরিনা চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়ে ১৩ জুলাই তিন দিনের রিমান্ডে যান। ওই রিমান্ডের পর ১৭ জুলাই তার আবার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

আর মামলায় গত ২৩ জুন আরিফ চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে যান। পরবর্তী সময়ে গত ১৫ জুলাই তাকে আবার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। রিমান্ড শেষে সব আসামিই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক। তিনি আরিফের চতুর্থ স্ত্রী। তার প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী রাশিয়া ও লন্ডনে থাকেন। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তালাক হয়েছে তার। চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনার কারণেই করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ পায় জেকেজি হেলথকেয়ার।

প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা, নায়ায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করেছিল। নমুনা সংগ্রহের জন্য মাঠকর্মী নিয়োগ দেয় তারা। তাদের হটলাইন নম্বরে রোগীরা ফোন দিলে মাঠকর্মীরা বাড়ি গিয়ে এবং বুথ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করতেন। এভাবে নমুনা সংগ্রহ করে তারা ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেন। যার মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটি জাল-জালিয়াতির মধ্যেমে তৈরি করে। প্রত্যেক সার্টিফিকেট প্রদানের বিনিময়ে তারা পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছেন।