নারীকে ধাক্কা: বাসে থাকা ‘সিসিটিভি ফুটেজ’ উধাও

বাকপ্রতিবন্ধী নারীকে বাসে নির্যাতন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার দৃশ্য পরিবহনটিতে থাকা সিসি ক্যামেরায় ধারণ হলেও তা পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে অভিযুক্ত চালক ও তার সহযোগী এটি ডিলিট করে দিয়েছেন। গতরাতে তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর ‘এন মল্লিক’ এসি বাসটি জব্দ করে র‌্যাব। এসময় সিসিটিভি ক্যামেরার ‘হার্ডডিস্ক’ পর্যালোচনা করতে গেলে সেখানে ফুটেজ পায়নি বাহিনীটি।

মঙ্গলবার এই তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তিনি বলেন, ‘নারীকে নির্যাতন করে বাস থেকে ফেলে দেবার ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে র‌্যাব অভিযুক্তদের ধরতে মাঠে নামে। গতরাতে কেরাণীগঞ্জ থেকে বাসটির চালক সবুজ মিয়া ও তার সহযোগী নাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব একটি ডিপো থেকে বাসটি জব্দ করে। বাসে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করতে হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, অভিযুক্তরা ঘটনার পর বাস থেকে সিসিটিভির ফুটেজ ডিলিট করে দিয়েছিল।’

এদিকে গত রবিবার কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর বাজার এলাকায় বাস থেকে বাকপ্রতিবন্ধী ওই নারীকে ফেলে দেয়া হয়। ঘটনাটির একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, সেদিন সকাল পৌনে নয়টার দিকে এন মল্লিক নামের একটি বাস থেকে ছুড়ে ফেলা হয় বোরকা পরা ওই নারীকে। মাটিতে পড়ে তিনি অস্ফুট স্বরে গোঙাচ্ছিলেন। পরে স্থানীয় লোকজন গিয়ে তাকে মাটি থেকে তোলেন।

ভিডিও চিত্রেই দেখা যায়, গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৩-১৫২১। এন মল্লিক বাসটি গুলিস্তান-নবাবগঞ্জ রুটে চলাচল করে।

মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার দিনের বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব মুখপাত্র। এসময় তিনি জানান, বাস থেকে নারীকে ছুড়ে ফেলে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত বাস চালক সবুজ মিয়ার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করবে র‌্যাব। কারণ চালক সবুজ মিয়ার ড্রাইভিং লাইসেন্স হালকা যানের থাকলেও ভারী যান (বাস) চালাতেন। তাছাড়া বাসটির রুট পারমিট যাচাইয়ে বিআরটিএ’তে চিঠি দেয়া হবে।

এন মল্লিক পরিবহনের বিরুদ্ধে এমন নির্যাতনের আরও অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জানি। সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা তদন্তে জানতে পারি ওই নারী এন মল্লিক পরিবহনের নিয়মিত যাত্রী ছিলেন। বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ওই নারীর বিষয়ে ভাড়া শিথিল করেছিলেন পরিবহনের একজন কর্মকর্তা।

বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া সেই ভিডিটি দেখুন…