স্লিভলেস ব্লাউজ পরে বইমেলায় গিয়ে কী অপরাধ করেছি?

২০২১ সালে স্লিভলেস ব্লাউজ নিয়ে কথা বলতে হয়, এটা নিয়ে আমাকে হেয় করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই। ষাটের দশকে, সত্তর দশকেও স্লিভলেস ব্লাউজ পরতো আমাদের দাদি-নানিরা। তখনও এটা স্বাভাবিক ছিল। অথচ এই সময়ে এসে স্লিভলেস ব্লাউজের কারণে কথা হচ্ছে- এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনার কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবিগুলো বইমেলায় কেউ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। এরপরে সেসব ভাইরাল হয়। চলতি বছজর বইমেলায় ভাবনার ‘গোলাপি জমিন’ নামের একটি উপন্যাস প্রকাশ হয়েছে। এই উপন্যাসের জন্যই মেলায় গিয়েছিলেন ভাবনা। পাঠক ও ভক্তদের অটোগ্রাফ দিয়েছেন। সেসময়ের কয়েকটি ছবি সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হয়।

বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ভাবনা কথা বলেছেন সঙ্গে।

ভাবনা বলেন, ‘একটি শ্রেণি সারাদিন ফেসবুকে পড়ে থাকে শুধু মেয়েদের ছবির নিচে বাজে মন্তব্য করার জন্য। এদের কাজ নেই। সারাদিন এরা ওঁত পেতে থাকে কখন মেয়েরা ছবি পোস্ট করবে আর সেখানে তারা বাজে মন্তব্য করবে। এরা নিম্ন মানসিকতার। এদের মন্তব্যই আমি দেখি না। কিন্তু দিনশেষে আমিও তো মানুশ্বহ আমারও তো পরিবার আছে কত সহ্য করা যায় এসব।’

এই শ্রেণী অসুস্থ উল্লেখ করে ভাবনা বলেন, ‘যারা দিলারা জামানের মতো একজন অভিনেত্রীর ছবির নিচে গিয়ে বাজে মন্তব্য করতে পারে তাদের দ্বারা সবই সম্ভব। এরা মানসিক বিকারগ্রস্ত, অসুস্থ। এদের চিকিৎসা হলো শাস্তি। এদের কাছে পেলে হয়তো বোঝাতে পারতাম।’

এসব থেকে উত্তরণের পথ আছে জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের সরকার- আমাদের পুলিশ যদি একটু সহায়তা করতো তাহলে এইসব অপরাধ হয়তো অনেকটা কমে যেতে পারতো। সাইবার ক্রাইমের তত্ত্বাবধানে যদি ১০ জন এরকম অপরাধীকে ধরে শাস্তি দেওয়া যেত তাহলে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হতে পারতো। এই দৃষ্টান্ত এইসব অপরাধ অনেক কমিয়ে দিতে পারতো।’

নিজের পোশাক সম্পর্কে ভাবনা বলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে এই মুহূর্তে কথা বলছি জিম করা অবস্থায়। এখন যে পোশাকে রয়েছি নিশ্চই এই পোশাকে আমি বইমেলায় যাবো না। শাড়ি ও হাতাকাটা ব্লাউজে কী সমস্যা? যথেষ্ট শালীন পোশাক পরেই আমি বইমেলায় গিয়েছি। স্লিভলেস ব্লাউজ পরে বইমেলায় গিয়ে কী অপরাধ করেছি। পাঠকদের অটোগ্রাফ দিয়ে অপরাধ করেছি? যদি এই পোশাক অশ্লীল হয় তাহলে তো অশ্লীলতার সঙগাই বদলে গেছে কিংবা আমার জানা নেই।’

আশনা হাবিব ভাবনা অভিনেত্রী হিসেবে সুপরিচিত। এর পাশপাশি লেখালেখি করেন ভাবনা। রয়েছে একটি কবিতার বই ও তিনটি উপন্যাস। ভাবনা বলেন, ‘আমি আমার লেখায় মেয়েদের নিয়ে লিখি, তাদের চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলি। যখন নামাকেও এইরকম হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়, তখন ভাবি আমরা কি এগিয়ে যাচ্ছি নাকি আসলেই পিছিয়ে যাচ্ছি। কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়ে যাই।’