নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্যোগে প্রতিবছর রাজধানী ঢাকায় তাজিয়া মিছিল করা হয়। সাধারণত পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদে গিয়ে শেষ হয়।

করোনার কারণে চলতি বছর এ মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবে তা অমান্য করেই তাজিয়া মিছিল করেছেন শতাধিক তরুণ।

শুক্রবার ২০ আগস্ট সকাল ১০টায় হোসেনি দালান থেকে তাজিয়া মিছিলটি বের হয়। পরে রীতি অনুযায়ী মিছিলটি মোহাম্মদপুরের দিকে রওনা হয়। তবে করোনায় কারণে এ আয়োজন ছিল সীমিত পরিসরে।

এর আগে ‘হায় হোসেন, ‘হায় হোসেন’ ধ্বনিতে মুখরিত পুরান ঢাকার ইমামবাড়া। ইসলামের জন্য ঐতিহাসিক কারবালা ময়দানে শহীদ হন হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)।

দিনটি স্মরণে হিজরি ৬১ সনের মহরমের ১০ তারিখের এ দিনে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তার পরিবারের সদস্যরা কারবালার ময়দানে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে শহীদ হন।

তাদের স্মরণে কালো কাপড় আর হাতে ইসলামের পতাকা নিয়ে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায় পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিল বের করে।

তাজিয়া মিছিলে অংশ নেওয়া শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা জানান, যেই সত্য প্রকাশে কারবালার ময়দানে জীবন দিতে হয়েছে ইমাম হোসাইনকে (রা.) সেই বাণীয় প্রচার করে যাচ্ছে তারা।

তার দেখানো পথেই অবিচল থাকবে মুসলিম সম্প্রদায়। বিভিন্ন স্থান থেকে ইমামবাড়ায় আসা শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা আরও জানান, পূর্ব পুরুষের রীতি মেনে তারাও প্রতিবছর ইমামবাড়ায় আসেন।

দোয়া করেন পরিবারের জন্য। পাশাপাশি অনেকই মানত করেন পরিবারের সদস্যদের রোগ মুক্তি চেয়ে। কেউ কেউ আসেন মনের আশা পূরণে, প্রতীকী কবরে মুরগি, ফল, মোমবাতি দিয়ে দোয়া করেন।

এদিকে করোনায় সীমিত আয়োজনে মধ্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল শক্ত অবস্থানে। শোক মিছিলে নিষিদ্ধ ছিল সব ধরনের ধাতব বস্তু।

লালবাগ জেনের উপ কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন জানান, সরকারের বিধিনিষেধ মেনেই আয়োজন চলছে তাজিয়া মিছিলের। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্তক রয়েছে পুলিশ।

অন্যদিকে হোসেনী দালানের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ফিরোজ হোসেন জানান, করোনার কারণে আয়োজন সীমিত করছেন তারা। রীতি মেনে গত ৪০০ বছর ধরে এই হোসেনি দালান থেকে তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করা হয়।