শিগগিরই টিকা রফতানি ফের শুরু করবে ভারত

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে বাইরের দেশে টিকার ডোজ রফতানি বিষয়ে যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, তা শিথিল করে শিগগিরই টিকা রফতানি শুরু করবে দেশটি।

তবে এবার এ বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়া হবে আফ্রিকার দেশগুলোকে। কেন্দ্রীয় সরকারের টিকাদান প্রকল্প ও টিকা রফতানি বিভাগের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রয়টার্সকে ওই কর্মকর্তা বলেন, স্থগিতাদেশ শিথিল করে পুনরায় টিকা রফতানি শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সরকার এবার আফ্রিকাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

টিকার ডোজ ও করোনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে ভারত আফ্রিকাকে সহায়তা করতে ইচ্ছুক। সোমাবর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিনিধি দলের।

সেই দলের অন্যতম সদস্য এবং ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তা ব্রুস আইলওয়ার্ড বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, চলতি বছর থেকে ফের টিকা রফতানি শুরু করা হবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে ভারতের সরকার।

আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই এ ব্যাপারটি শুরু হবে, হয়তো আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। গত মার্চের শুরু থেকে ভারতে শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। সে সময় একদিনে ৪ লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়া এবং প্রতিদিন ৪ হাজারেরও বেশি মৃত্যু দেখেছিল দেশটি।

পরিস্থিতি সামাল দিতে এপ্রিলের মাঝামাঝি বিদেশে টিকা রফতানিতে স্থগিতাদেশ দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।বর্তমানে অবশ্য সেই বিপর্যয়ে ঝাপটা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে বেড়েছে টিকাদানের গতিও।

বর্তমানে ভারতের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার অর্ধেক করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন। এই আদেশ আসার আগ পর্যন্ত বিশ্বের ১০০ টি দেশে প্রায় ৬৭ কোটি ডোজ টিকা উপহার ও রফতানি হিসেবে পাঠিয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা উৎপাদনকারী দেশ ভারত।

উপহার ও রফতানি হিসেবে ভারত পাঠিয়েছিল করোনা টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভারতীয় সংস্করণ কোভিশিল্ড, যেটি প্রস্তুত করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া।

এদিকে, টিকার ডোজের অভাবে করোনা টিকাদানে আফ্রিকার দেশগুলো বেশ শোচনীয় অবস্থায় আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ৫৭০ কোটি ডোজ করোনা টিকা; তার মাত্র ২ শতাংশ ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে আফ্রিকার দেশগুলোতে। সূত্র : রয়টার্স