নড়াইলে ভূমি কর্মকর্তার বিচার ও অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূক্তভোগী ইউনিয়নবাসী তার বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, সরকারি গাছ কর্তন ও নারী কেলেংকারীর অভিযোগ করেন।

প্রায় দেড় বছর ধরে এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা। গত ২৫ মে ভূমি কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যার অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে তার অপসারণ এবং শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা (ভূক্তভোগী)।

এছাড়া কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং কালিয়া উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার (এসিল্যান্ড) কাছেও একাধিকবার অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা।

তাই নিরুপায় এলাকাবাসী গতকাল (সোমবার) দুপুরে মূলশ্রী এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন। মানববন্ধন শেষে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন কালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহুরুল হক।

এ সময় তিনি ভূক্তভোগীদের ধমকের সুরে প্রশ্ন করেন, কেন মানববন্ধন করেছেন? এরপর এলোমেলো প্রশ্নবানে জর্জরিত করেন তাদের (ভূক্তভোগী)। একপর্যায়ে মানববন্ধনের ব্যানার জব্দ করেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদেরও কটূক্তি করেন উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা জহুরুল হক। সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। এছাড়া মানববন্ধন বন্ধে ১৪৪ ধারার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

পহরডাঙ্গা ইউনিয়নবাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন-বীরমুক্তিযোদ্ধা শামছুল শেখ, মূলশ্রী ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাকির শিকদার, ভূক্তভোগী তহিদুল ইসলাম, নান্টু কাজী, মামুন শেখসহ অনেকে।

বক্তারা বলেন, কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে জমির মালিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে থাকেন।

এছাড়া ঠিকমত অফিসের কাজ করেন না। তার বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, সরকারি গাছ কর্তন ও নারী কেলেংকারীর অভিযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ, ছবি ও ভিডিওচিত্র দেখান ভূক্তভোগীরা।

অপরদিকে ভূক্তভোগী মূলশ্রী গ্রামের তহিদুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যার দুর্নীতি-অনিয়মের পাশাপাশি কালিয়া উপজেলা এসিল্যান্ড সম্প্রতি আমার জমির কাগজপত্র ধরে ফেলে দিয়েছে।

কী কারণে এমনটি করেছেন, জানি না। পরে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে জমির কাজটা (দাখিলা) করেছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভূমি কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যা সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই।

কালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহুরুল হক বলেন, ডিসি স্যারের কাছে ভূমি কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ করা হয়েছে। এগুলোর তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী তার (মাহামুদ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।