দুর্নীতির মামলায় যবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য্য ড. আব্দুস সাত্তার কারাগারে

দুদকের মামলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। আজ সোমবার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন। মামলার ধার্যদিনে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। দুদকের পিপি সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে নিয়োগ এবং সরকারি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট উপাচার্য্য আব্দুস সাত্তার, উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুর রউফ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপ-উপাচার্য ড.কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক যশোরের তৎকালীন উপ-পরিচালক আল-আমিন। মামলার তদন্ত শেষে উল্লিখিতদের অভিযুক্ত করে সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে আবেদন করেন আসামি আব্দুর রউফ। নিয়োগের জন্য গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট বাছাই বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার। বাছাই বোর্ডের আর এক সদস্য ছিলেন ইবির উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন। একই বছরের ২২ আগস্ট মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এসময় আরও তিন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু কাউকে পাস করানো হয়নি।

বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে আব্দুর রউফের কোনো পূর্ব-অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও বাছাই বোর্ড অবৈধভাবে তাকে প্রথমে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-১,পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

রিজেন্ট বোর্ড সভাপতি হিসেবে সাবেক উপাচার্য্য ড. আব্দুস সাত্তার উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাকে সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। আব্দুর রউফ সেকশন অফিসার পদে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিলেকশন গ্রেডসহ বিভিন্ন সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে বিভাগীয় প্রার্থীর সুবিধা নিয়ে ২০১৪ সালে সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে এবং ২০২১ সালে উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। অবৈধ নিয়োগের কারণে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত তিনি বেতন-ভাতা বাবদ মোট ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

আজ এ মামলায় ধার্য্যদিনে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানান উপাচার্য্য আব্দুস সাত্তার। বিচারক শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, এ মামলার অপর আসামি যবিপ্রবির উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুর রউফ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন জামিনে রয়েছেন।