মিয়ানমারে জান্তার দমনপীড়নের প্রমাণ সামনে আনতে বাধা

পাহাড়ের উপর অবস্থিত ছিমছাম একটা ছোট্ট শহর মিয়ানমারের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় চিন প্রদেশের থান্টলাং। দমনপীড়নের অংশ হিসেবে গত মাসে ওই শহরের শতাধিক বাড়ি ও চার্চে আগুন ধরিয়ে দেয় মিয়ানমানের সামরিক জান্তা।

স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে ওই ঘটনার সত্যতাও পাওয়া যায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলো জান্তার এই দমনপীড়ন বন্ধের জন্য সম্প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে। কিন্তু বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার ওই ঘটনার প্রমাণ সামনে আনার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে সোমবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থান্টলাংয়ের বাসিন্দা থাং বিয়াক টেলিভিশনে খবর দেখে তার বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। সে সময় তিনি প্রতিবেশী দেশ ভারতে ছিলেন।

মিয়ানমারের জান্তা সেখানে দমনপীড়ন শুরু করার পর থান্টলাং থেকে তিনি, তার তিন ছেলেসহ স্থানীয় কয়েকজন চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের মিজোরামে পালিয়ে আসেন।

থাং বিয়াক আল জাজিরাকে বলেন, আমরা যখন পালিয়ে এসেছিলাম কিছুই সঙ্গে আনতে পারিনি। আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল। সামারিক জান্তার ভয়ে ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন তিনি।

চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর ওই শহরে ১৬০টি বাড়ি ও দুইটি চার্চ পুড়িয়ে দেয়া হয়। পুড়িয়ে দেওয়া বাড়িগুলোর মধ্যে থাং বিয়াকের বাড়িও রয়েছে।

চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক জান্তা মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর দেশজুড়ে সশস্ত্র বেসামরিক বাহিনীকে দমনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর অভিযানের অংশ হিসেবে সেখানে এই নাশকতা চালানো হয়েছে বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।

বিভিন্ন দেশের সরকার, মানবাধিকার সংস্থা থেকে শুরু করে সুশীল সমাজ থান্টলাং শহরে এই নাশকাতার জন্য সেনাবাহিনীর নিন্দা জানিয়েছে। এই ঘটনার বিচারের দাবিও জানিয়েছে তারা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ পাঁচশর বেশি সংস্থা মিয়ানমারের জান্তার এই দমনপীড়ন বন্ধের জন্য জরুরি ভিত্তিকে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গিত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে।

এদিকে, সেনাবাহিনীকে বিচারের মুখোমুখি করা আহ্বান জানানোর সঙ্গে সঙ্গে যারা থান্টলাংয়ে ঠিক কী হয়েছিল সে ব্যাপারে প্রমাণ সংগ্রহ করে প্রকাশ করছে, তাদের গ্রেফতার বা হামলা এবং চলমান ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধসহ বিভিন্ন ঝুঁকি ও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।