জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকিহ্রাসে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং পরিবেশ গবেষক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিহ্রাসে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে চলমান কপ-২৬ সম্মেলনের সাইড ইভেন্ট হিসেবে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ প্রণীত ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র‍াটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে। ফলে জলবায়ু ঝুঁকিহ্রাসে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল।

সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এই অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নে কাজ করছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে ৪৪৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৭৮৯টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে জানিয়ে ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য দূরদর্শী নেতৃত্বে এ সব পদক্ষেপের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করেও দেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

সরকারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড-ইডকল আয়োজিত ‘বাংলাদেশের কৃষিতে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সৌরচালিত সেচযন্ত্র ব্যবহার বিষয়ে সংলাপ’ সংলাপে মন্ত্রী দেশের কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বৃদ্ধির সহায়তায় বিশ্বব্যাংক ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

ড. হাছান বলেন, কৃষি সেচকাজে ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে জলবায়ুসহিষ্ণু, ব্যয়সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে দেশে-বিদেশে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে। বাংলাদেশে এখন ১২ লাখ ৪০ হাজারের মতো ডিজেলচালিত সেচপাম্প রয়েছে। এগুলো চালানোর জন্য কৃষকদের লাখ লাখ টন ডিজেল কিনতে হয়।

পাশাপাশি ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র প্রচুর কার্বন নিঃসরণ করে। ডিজেলের পরিবর্তে সৌরশক্তিচালিত বা সোলার সেচপাম্প ব্যবহার করলে একদিকে যেমন কার্বন নিঃসরণ বন্ধের ফলে পরিবেশরক্ষা হবে, অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং ডিজেল কিনতে ও পাম্প মাঝে মাঝে নষ্ট হওয়ার কারণে কৃষকরা যে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন, তা সাশ্রয় হবে।

কারণ সৌরসেচযন্ত্র একটানা ২০ বছর ব্যবহারযোগ্য, জানান তিনি। এ সময় আয়োজক সংস্থার প্রশংসা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইডকল ইতোমধ্যেই দেড় হাজার সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিশ্রুতি অর্জনেও সংস্থাটি ভূমিকা রাখছে এবং আশা করি, দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান প্রতিশ্রুতি যেমন কার্বন নিঃসরণ কমাবে তেমনি কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করবে, সেকারণে আমাদের প্রয়োজন সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ, গবেষণা ও উদ্ভাবন।