যশোরে কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণ নিয়ে ধোঁয়াশা!

যশোরের ঝিকরগাছার কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণ করতে হবে।

তবে, অভিযোগ করা হচ্ছে মেডিকেল বোর্ডে কাজল রেখার পরিবর্তে অন্য নারীকে হাজির করে লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় পূনরায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়কের নিকট আবেদন জানানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মৃত আজির বক্সের ছেলে হাফিজুর রহমানের সাথে বিয়ে হয় ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের ইসলাম হোসেনের মেয়ে কাজল রেখার। বিয়ের পরে স্বামী হাফিজুর দাবি করেন কাজল রেখা তৃতীয় লিঙ্গের।

অন্যদিকে কাজল রেখা নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ন নারী দাবি করেন। একপর্যায় কাজল রেখা যশোর আদালতে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের অভিযোগে হাফিজুরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।

আদালত মামলায় সমন ইস্যু করেন। অন্যদিকে ঝিানইদহ আদালতে কাজল রেখার বিরুদ্ধে মামলা করেন হাফিজুর রহমান। কাজল রেখার দায়ের করা মামলায় চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষ আদালতে হাজির হন। এসময় অন্তবর্তীকালীন জামিন পান হাফিজুর।

সবশেষ ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে হাফিজুর জানান, কাজল রেখা তৃতীয় লিঙ্গের। তার সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক হয়নি। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালত এক পর্যায়ে হাফিজুরের স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।

পরে কাজল রেখা জেলা জজ আদালতে রিভিশন আপিল করেন। জেলা জজ আদালত গত ১৩ ডিসেম্বর যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

গত ২৬ ডিসেম্বর যশোর হাসপাতালের ৫ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ওইদিনই কাজল রেখার মেডিকেল পরীক্ষা করে। কিন্তু হাফিজুর দাবি করছেন কাজল রেখা তার পরিবর্তে তার বোন অথবা অন্য কোনো নারীকে মেডিকেল বোর্ডে হাজির করে পরীক্ষা করিয়েছেন।

এ জন্য তিনি প্রথমে কাজল রেখাকে শনাক্ত করে ফের পরীক্ষার জন্য জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক বরাবর গত ২৭ ডিসেম্বর আবেদন জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে হাফিজুরের আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আদালত কাজল রেখার লিঙ্গ শনাক্তের নির্দেশ দিয়েছেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের পক্ষ থেকে তা করা হয়েছে। কিন্তু কাজল রেখাকে শনাক্ত করা হয়নি বলে দাবি করেন কাজী ফরিদুল ইসলাম।

এ বিষয়ে কাজল রেখার আইনজীবী সরদার সেলিম রেজা বলেন, এসব অভিযোগ আসামির মনগড়া। আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবেই পরীক্ষা করা হয়েছে। কাজল রেখা নিজে ডাক্তারদের নিকট হাজির হয়েছিলেন।

এ বিষয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আক্তারুজ্জামান বলেন, হাসপাতালের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজল রেখাকে নোটিশের মাধ্যমে ডাকা হয়েছে এবং তিনি এসেছিলেন।

তার মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। কাজলের পরিবর্তে অন্য নারী এসেছিলেন হাফিজুরের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরণের কোনো কাগজ তিনি হাতে পাননি।