কাশ্মীরের সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রী গৃহবন্দি

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রীকে ফের গৃহবন্দি করা হয়েছে। নির্বাচনী আসনের সীমানা নির্ধারণ-সংক্রান্ত কমিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন তারা।

এ আন্দোলন ঠেকাতেই শনিবার তাদের গৃহবন্দি করে প্রশাসন। খবর এনডিটিভির। খবরে বলা হয়েছে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাহ রাজধানী শ্রীনগরের গুপকার রোডের বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন। সে সময়ে উচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত ওই এলাকা সিল করা হয়েছে।

শ্রীনগর পুলিশ ওই এলাকায় রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ির সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি মোতায়েন করেছে। ফলে রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না এবং কেউ বাড়ি থেকে বেরও হতে পারছেন না।

সম্প্রতি সীমানা নির্ধারণ কমিশন বিধানসভা আসনের সীমানা বণ্টনের বিষয়ে খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে। ওই কমিশন কাশ্মীরের একটি আসনের বিপরীতে জম্মু প্রদেশের জন্য ছয়টি অতিরিক্ত আসনের প্রস্তাব করেছে, যা সাবেক রাজ্যের উভয় প্রদেশের জনসংখ্যার অনুপাতের সঙ্গে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ।

বিরোধীরা এই প্রস্তাবকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রস্তাবিত এই আসন বণ্টন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে একজনের একটি ভোট- এই অধিকারের পরিপন্থি।

এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ নেতৃত্বাধীন গুপকার জোট। এর পরই তাদের গৃহবন্দি করা হয়।

গৃহবন্দি হওয়ার পর ওমর আবদুল্লাহ এক টুইট বার্তায় একটি ছবি পোস্ট করেছেন। এতে তার ও তার বাবা ফারুক আবদুল্লাহর বাড়ির ফটকের অবস্থা দেখানো হয়।

তার বাবা এবং বোনও বাড়িতে বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ছবিতে তাদের বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রাক মোতায়েন দেখা যায়।

জোটের ডাকে শনিবার অনেক স্থানে ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।

তারা গৃহবন্দি নেতাদের মুক্তি ও সীমান নির্ধারণ বাতিলেরও দাবি জানান। পরে বিক্ষোভকারী গুপকার রোডের দিকে অগ্রসর হলেও পথে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-ক অনুচ্ছেদ দুটি বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরকে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে কেন্দ্রীয় সরকার।

ফলে ভারতের অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের কাশ্মীরে সম্পত্তি ক্রয় করার ওপর বিধিনিষেধ উঠে যায়। পাশাপাশি অন্য রাজ্যে বসবাসরত ভারতীয়দের কাশ্মীরে সরকারি চাকরি পাওয়া কিংবা স্থায়ীভাবে বসবাসের বিধিনিষেধও বাতিল হয়ে যায়।

তবে শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে স্থানীয় সব রাজনৈতিক দল। সে সময়ও এই তিন মুখ্যমন্ত্রীসহ বহু রাজনীতিবিদকে গৃহবন্দি করেছিল সরকার।