এক বছরের মধ্যে ইসি গঠনে আইন হতে পারে

mahabubul alam hanif
ফাইল ছবি

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে দুই একটি দল না গেলেও রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতার কারণে। সবাই না গেলে হয়ত সার্বজনীন হবে না।

যে আইন দীর্ঘ ৪০ বছরে হয়নি সেটা এক মাসের মধ্যে কিভাবে হবে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, ইতোপূর্বে কেউ আইনটি করার উদ্যোগ নেয়নি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেটা ভাবছে। আইনমন্ত্রী এরইমধ্যে বলেছেন খুব শিগগিরই নির্বাচন কমিশন গঠনে কাজ শুরু করব। আমরা আশা করছি হয়ত আগামী এক বছর বা কাছাকাছি সময়ে এটা করা সম্ভব হতে পারে।

সোমবার ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি। এসময় পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও সৈয়দ আশরাফের বোন সৈয়দা জাকিয়া নূর।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতার কারণে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আহ্বান করেছেন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা একক ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল, কারও সঙ্গে আলাপের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি,

কিন্তু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি বিধায় রাষ্ট্রপতি সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই সকল রাজনৈতিক দলের মতামত ও পরামর্শ নিয়ে সার্চ কমিটির মাধ্যমে একটা ভাল নির্বাচন গঠন করার জন্য সংলাপ আহ্বান করেছেন। সেই সংলাপে যদি কেউ অংশ না নেয়, সেটি তাদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে।

আমার বিশ্বাস সকলেই অংশ নেবে। এক্ষেত্রে দুই একটি দল যদি সংলাপে অংশ না নেয় তাও রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন কমিশন গঠন করতেই হবে সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতার কারণে।

এতে সংকট সৃষ্টি হবে না। হয়ত সকলের অংশগ্রহণ থাকলে যেটা সার্বজনিন হতো সেটা হয়ত কিছুটা ঘাটতি দেখা যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন গঠন হবে সাংবিধানিক বাধ্যতা অনুযায়ী।

অনেক রাজনৈতিক দল বলেছেন আগামী অধিবেশনেই আইনটি করা সম্ভব এ বিষয়ে আপনার মতামত কি জানতে চাইলে হানিফ বলেন, যে আইন বিগত ৪০ বছরে হয়নি, সেই আইন হঠাৎ করে এক মাসের মধ্যে হয়ে যাবে? এটা যারা বলছেন তারা যৌক্তিক বলেন নাই।

যারা বলছেন তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে করেন নাই কেন? তারা তো অনেকবারই ছিলেন। স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২১ বছর ক্ষমতায়, বাকি ২৯ বছরই ছিল কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে করেন নাই কেন? আমরা বলেছি নির্বাচন কমিশন আইন করা হয় নাই। অতীতে হয়তো কেউ উদ্যোগ নেয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আইনটির কথা ভাবছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলেন, আমরাও চাই বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রীই নয় সাধারণ মানুষ হিসেবেও তার অসুস্থতা থেকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরুক।

তবে এটাও মনে রাখতে হবে আইন সবার জন্য সমান। কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য আইন হয়নি বা বাংলাদেশে সেই বিধানও নেই। আইন পরিবর্তনেরও সুযোগ নেই।

তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য একটা পথ খোলা আছে আইনের মাধ্যমে সেটা হচ্ছে তিনি যদি রাষ্ট্রপতির নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। দণ্ড মওকুফ হলে তিনি শুধু বিদেশ যেতে পারবেন।

সরকার ভীত হয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছে না বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে হানিফ বলেন, এর আগে তো বেগম খালেদা জিয়া মুক্তই ছিলেন।

২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন চলছিল তাদের রায় যখন কার্যকর হয়েছিল তখন এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার নেতেৃত্বে সেই সময় সারাদেশে জ্বালাও পোড়াও সহিংসতা করেছিল।

সরকার সেই সমস্ত জ্বালাও পোড়াও মোকাবিলা করেই এই পর্যয়ে এসেছে। খালেদা জিয়া নতুন করে এমন কিছু হয়নি যার জন্য সরকারকে ভীত হতে হবে।