পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবুজ কর আরোপের কথা ভাবছে সরকার

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশের উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে পরিবেশ আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব যন্ত্রপাতি ও সম্পদ আহরণের জন্য বিনিয়োগ কর ছাড় এবং সবুজসেবা প্রদানকারীদের আয়কর মওকুফের বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার।

একই সঙ্গে দূষণ নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে সবুজ কর আরোপ করার বিষয়টিও বিবেচনাধীন রয়েছে। সবুজ কর প্রণোদনা এবং সবুজ কর আরোপের ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হচ্ছে :

পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সবুজ প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সম্পদ সংগ্রহে শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহকে উৎসাহ প্রদান, সবুজ প্রযুক্তি সেবা প্রদানকারীদের প্রসার এবং দূষণ সৃষ্টিকারী কার্যক্রম নিরুৎসাহিতকরণ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশান শ্যুটিং ক্লাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় গ্রিনটেক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘গ্রিন ইনক্লুসিভ বিজনেস চ্যাম্পিয়ন্স’ শীর্ষক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, গ্রিন ইনক্লুসিভ বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য শিল্প-কারখানায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে ক্লিন ও গ্রিন টেকনোলজির ব্যবহার উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ইতিপূর্বে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকার একটি ফান্ড গঠন করে।

পুনরর্থায়নের মাধ্যমে পরিচালিত সবুজ প্রকল্পগুলোতে অর্ধশতাধিক সবুজ পণ্যের বিনিয়োগের উদ্যোগ কার্যকর করেছে। পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রচলন, গবেষণা সম্পাদন এবং পরিবেশবান্ধব ব্যবসা/উদ্যোগ উৎসাহিত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক একটি বিশেষ ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে,

যার ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্যোক্তাগণ পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপন ও ব্যবসায় উৎসাহিত হবে। পরিবেশদূষণের ঝুঁকি বৃদ্ধির অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য সবুজ অর্থনীতিতে প্রবেশ করা ছাড়া দেশের আর কোনো উপায় নেই।

বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা, ২০৩০ অর্জনে পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সুনির্দিষ্ট কিছু পলিসি গ্রহণের কথা উল্লেখ করে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে সোলার প্যানেল এবং হাইব্রিড গাড়ির ওপর কতিপয় সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করেছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান/প্রকল্পসমূহকে কমপ্লায়েন্সের আওতায় এনে পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।

এ ছাড়াও পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ক্ষতিসাধনের জন্য দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান/প্রকল্প হতে পরিবেশ অধিদপ্তর ক্ষতিপূরণ আদায় করে থাকে। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতিসাধনের জন্য প্রায় ১৯০ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে।