চালের দাম শিগগিরই স্থিতিশীল হবে: কৃষিমন্ত্রী 

চালের দাম শিগগিরই স্থিতিশীল হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, বর্তমানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিকট খাদ্যের মজুত রয়েছে ২০ লাখ টন, যা যে কোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) থেকে উপজেলা পর্যায়ে ওএমএস শুরু হবে। এদিকে এপ্রিল মাসেই নতুন চাল বাজারে আসবে। সুতরাং চালের দাম শিগগিরই স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক হবে।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন।

এ সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম উপস্থিত ছিলেন। চালের দাম বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি দেশে চালের দাম কিছুটা অস্থিতিশীল ও ঊর্ধ্বমুখী।

আন্তর্জাতিক বাজারেও খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে গমের দাম ২৩০ থেকে ২৮০ ডলারের মধ্যে ছিল, তা বেড়ে এখন ৪৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে গম আমদানি হয়েছিল ৪৮ লাখ টন। তবে এ অর্থবছরে জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১৬ লাখ টন আমদানি হয়েছে। দাম বাড়ার কারণে গম আমদানি কম হচ্ছে।

ফলে আটা, ময়দার দাম চালের চেয়ে বেশি, অথচ সবসময়ই আটার দাম চালের চেয়ে কম থাকে। এ ছাড়া দেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, প্রতি বছর ২২ থেকে ২৪ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে।

অ্যানিমেল ফিড হিসেবেও চালের কিছু ব্যবহার হচ্ছে। এসব মিলে চালের চাহিদা ও কনজামপশন বেড়েছে। তবে এই মুহূর্তে দেশে খাদ্যের কোনো সংকট নেই, ভবিষ্যতেও হবে না।

আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, মাঠপর্যায়ে যে ফসল কৃষকরা ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন, ঢাকায় এসে সেই ফসলের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি কেন হবে? মধ্যস্বত্বভোগী, ফড়িয়া সারা পৃথিবীতেই আছে, কিন্তু এত দামের পার্থক্য হবে কেন? পরিবহনে চাঁদাবাজিসহ অনেক অপ্রত্যাশিত খরচ আছে।

একটি ট্র্যাকের মাঠপর্যায় থেকে ঢাকা পৌঁছানো পর্যন্ত কত খরচ হয়, কোথায় কোথায় খরচ হয়, তা খুঁজে বের করতে জেলা প্রশাসক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও কৃষি মন্ত্রণালয় মিলে স্টাডি করবে। স্টাডির মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা নিরসনে জাতীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ দিকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) থেকে উপজেলা পর্যায়ে এক হাজার ৭৬০ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএসে চাল ও আটা বিক্রি শুরু হবে।

চাল ৩০ টাকা কেজি ও আটা ১৮ টাকা কেজিতে দেওয়া হবে। যদিও সরকারিভাবে এ চালের আমদানি খরচ ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা। চালের মজুত সর্বকালের সর্ববৃহৎ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, পচার মতো চাল গোডাউনে নেই। মজুতকৃত চাল মানসম্পন্ন, ফলে মানুষ খাবে।

খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, ওএমএস যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, সে জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে,

জেলা-উপজেলা পর্যায়ে টিম গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধ মজুতদার চিহ্নিত করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও জরিমানা করার জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।