দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়

বিরোধী মতামতের তোয়াক্কা না করে, বিগত দুটি নির্বাচন কমিশনকে দায়মুক্ত করতে সরকারি দলের পছন্দমতো কমিশন গঠনের নিমিত্তে নতুন নির্বাচন কমিশন আইন পাশ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে গণ অধিকার পরিষদ। এছাড়া দলটি মনে করে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর পুরানা পল্টনে পরিষদের নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন আইন ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এসব মন্তব্য করেন দলটির নেতারা।

লিখিত বক্তব্যে দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেন, বর্তমান সরকারের সময়কালে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত বিগত দুটি নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হওয়ার মাধ্যমে সুস্পষ্ট প্রমানিত হয়েছে যে,

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। রাজনৈতিক নেতাকর্মীর ঐক্যমত ছাড়া নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে তাতে জনমতের চাওয়া প্রতিফলিত হবে না। বরং বিগত বিতর্কিত দুটি কমিশনের মতোই হবে।

বক্তারা বলেন, নতুন আইনটিতে সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মতামতের সুযোগ না রেখে শুধুমাত্র সরকারি দলের এবং তাদের নিয়োগকৃত কতিপয় ব্যক্তির মতামতের বিধান রাখা হয়েছে। ফলে এতে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না। যা নির্বাচনী সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে।

এ ধরনের গণবিরোধী আইনকে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করে গণঅধিকার পরিষদ। এছাড়া ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ অনস্বীকার্য।

এ সময় দেশের চলমান রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সংকট নিরসনে গণঅধিকার পরিষদ রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা ও সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারের নিকট দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া বলেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশ বিপদের মুখে। আরও নিষেধাজ্ঞা আসবে সে ব্যাপারে আপনারা নিশ্চিত থাকুন।

এখন শুধু সরকার বিপদে নয় দেশ বিপদে পড়ছে। এই বিপদ থেকে উত্তরণের জন্য তাদের সব বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। এটা একটা জাতীয় সমস্যা, শুধু আওয়ামী লীগের সমস্যা নয়।

আওয়ামী লীগের শাসনের অবসান ঘটবে এটাও তারা ইশারা-ইঙ্গিতে বুঝেছে। সরকারের জন্য এতদিন যারা কাজ করেছে, মানুষকে গুম-খুন করেছে তারা এখন দুশ্চিন্তায় আছে।

তিনি বলেন, শুধু নিজেরা ডুববে না, দেশকে ডুবিয়ে এই স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবে। সরকার দেশের মানুষকে বুঝতে দিতে চায় না নিজের দোষে তারা কত বড় বিপদে পড়েছে, কত বড় দুশ্চিন্তায় আছে।

তারা আমাদের সামরিক বাহিনীকে বিপদে ফেলে দিয়েছে, পুলিশ বাহিনীকে বিপদে ফেলেছে। এর ফলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এটাও তারা এখন বুঝতে পারছে।