সাইবার ক্রাইম একটি বৈশ্বিক সমস্যা

hackers cyber attack

সাইবার ক্রাইমকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই সমস্যা প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

শনিবার রাতে বাংলাদেশ ক্রিমিনোলজি অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে এ আহ্বান জানান তিনি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে র‍্যাবের মহাপরিচালক ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, অপরাধের ধরন দ্রুত পরিবর্তনসহ সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধের অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। সেই চ্যালেঞ্জ প্রতিরোধে র‍্যাবের গৃহীত পদক্ষেপগুলো এবং সাইবার ক্রাইম মোকাবিলায় র‍্যাবের সাফল্যের কথা বিষদভাবে তুলে ধরেন।

ওয়েবিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন চিটাগাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার চৌধুরী। তিনি বলেন, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একার পক্ষে সম্ভব নয়, বরং এর জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

ওয়েবিনারে উপ-পুলিশ কমিশনার মিশুক চাকমা ‘ক্রাইম ইন ডিজিটাল প্ল্যাটফরমস : বাংলাদেশ পুলিশ পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি তার প্রবন্ধে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। সাইবার ক্রাইম কী, সাইবার ক্রাইমের প্রকারভেদ, সাইবার ক্রাইম মোকাবিলায় করণীয় প্রভৃতি বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন তিনি।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম সাইবার ক্রাইমের ধরন অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার

এবং অপরাধীদের সাজা সুনিশ্চিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রতিটি সাইবার ক্রাইমকে আলাদা আলাদা করে দেখার পরামর্শ দেন তিনি।

পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের এমডিএস (একাডেমিক অ্যান্ড রিসার্চ) মো. গোলাম রসুল সাইবার ক্রাইমের ওপর আরও একাডেমিক গবেষণা এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সাইবার সিকিউরিটি সাবজেক্ট চালু করার পরামর্শ দেন। তিনি সাইবার ক্রাইম মোকাবিলায় প্রশিক্ষিত জনবলের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজ রহমান সাইবার অপরাধের সংজ্ঞাকে আরও সুস্পষ্ট করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করে বলেন,

অন্যান্য প্রচলিত অপরাধের মতো এই অপরাধ সংঘটনের পেছনের কারণগুলো গবেষণা করে খুঁজে বের করতে হবে এবং এই অপরাধ নির্মূলে পর্যাপ্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক ও সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক মনিরা নাজমী জাহান সাইবার জগতে নারীর প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সার্বিক বিচার ব্যবস্থাকে কিভাবে আরও বেশি নারীবান্ধব করা যায় সেই বিষয়ে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. মোহাম্মদ বিন কাশেম। তিনি বলেন, যেহেতু পুলিশ সামাজিক একজন এজেন্ট, তাই তার একার পক্ষে সাইবার অপরাধ দমন করা কষ্টসাধ্য। এই অপরাধ দমনে অন্যান্য সামাজিক এজেন্টদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।