অন্যের রক্তের টাকায় রাশিয়াকে অর্থ জোগাচ্ছে ইউরোপ

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের শুরু দিকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ক্রয় না করার জন্য ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।

কিন্তু রাশিয়ার ভোজ্য তেলের উপর নির্ভরশীলতার কারণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এই আহ্বানে কার্যত সাড়া দিতে পারেনি তারা। এ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই জেলেনস্কির।

সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারেও বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন জেলেনস্কি।

ইউরোপীয় দেশগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়ার তেল ক্রয় চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেছেন, অন্যের রক্তে রাশিয়ার তেলের দাম পরিশোধ করছে ইউরোপ।

এসময় মূলত জার্মানি ও হাঙ্গেরির দিকে ইশারা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এ দুটি দেশের প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া জ্বালানি তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা ঠেকানোর প্রচেষ্টার অভিযোগ আনেন তিনি।

জার্মানি ও হাঙ্গেরিতে তেল বিক্রি করে চলতি বছর ৩২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে করবে রাশিয়া। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বার্লিনের অবস্থান নিয়ে ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করছেন ইউক্রেনের নেতারা।

ইউক্রেনে রাশিয়ান বাহিনীর হামলার পর পশ্চিমা দেশগুলোর দেয়া কিছু নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন দিয়েছে বার্লিন। কিন্তু তেল বিক্রিতে কঠোর পদক্ষেপের ক্ষেত্রে বিরোধিতা করে আসছে দেশটি।

এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের কিছু মিত্র ও অংশীদার বুঝেছে এটা ভিন্ন এক সময়। এখন ব্যবসা বা অর্থের কোনো বিষয় নেই। এটা টিকে থাকার বিষয়।’

ইউক্রেনে আরও অস্ত্র সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেছেন, রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট দ্রুত অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কিছু ইউরোপের দেশ সাহায্য করার চেষ্টা করছে এবং সাহায্য করছে। তবে এসব সাহায্য আরও দ্রুত দরকার। যত দ্রুত হয় ততই ভালো। পারলে এখনই সাহায্য দরকার।

সম্প্রতি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে সরে গেছে রাশিয়ার সেনারা। তবে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে রক্তক্ষয়ী ও দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যেহেতু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরও বেশি এলাকা দখলের প্রচেষ্টায় সেখানে তার সামরিক অভিযান পুনরায় কেন্দ্রীভূত করেছেন।

রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, মারিওপোল এবং কিয়েভের বুচা ও বোরোদ্যাঙ্কায় রুশ সেনারা যে নৃশংসতা চালিয়েছে তাতে শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা আরও সংকুচিত হয়েছে।