আলোকিত হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু

স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। আর ১০ দিন পরই খুলছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতু চালু হলে উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিতে আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না। এমন স্বপ্নে যখন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বিভোর, তখন সেতুতে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সবগুলো বাতি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে পুরো পদ্মাসেতু আলোকিত করে তোলা হয়েছে। এই প্রথম একসঙ্গে জ্বলে উঠল ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুতে থাকা ৪১৫টি বাতি। এর মধ্য দিয়ে দুই প্রান্তসহ মাঝ পদ্মায়ও আলোয় ঝলমলে করে উঠেছিল পদ্মা সেতু।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সহকারী তড়িৎ প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন সমকালকে জানান, সন্ধ্যায় সবগুলো বাতি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে পুরো পদ্মাসেতু আলোকিত করে তোলা হয়। এর আগে সোমবার সেতুর ৪১৫টি বাতির মধ্যে মাওয়া প্রান্তের ২০৫টি বাতি জ্বালানো হয়েছিল। সপ্তাহখানেক ধরে পর্যায়ক্রমে সব বাতি জ্বালানো হয়। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথমবারের মতো সব বাতি এক সঙ্গে জ্বালানো হয়েছে। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। পরদিন সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দ্বার উন্মোচন হতে চলেছে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার সাড়ে ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে আলোয় ঝলমলে করে উঠল পদ্মা সেতু। মাওয়া প্রান্তের ল্যাম্পপোস্টে একসঙ্গে জ্বলে ওঠে ২০৫টি বাতি। এর আগে ৫ জুন বিকেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়। ওই দিন সেতুর ১৪ নম্বর থেকে ১৯ নম্বর পিয়ারের মাঝামাঝি ২৪ ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হয়েছিল। এরপর ১১ জুন পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে বাতি জ্বালানো হয়।

তিনি আরও জানান, মুন্সীগঞ্জ পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির দেওয়া বৈদ্যুতিক সংযোগের মাধ্যমে সোমবার মাওয়া প্রান্তের ২০৫টি ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হয়েছিল। এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে জেনারেটরের মাধ্যমে আলো জ্বালানো হয়েছিল। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দেওয়া বৈদ্যুতিক সংযোগের মাধ্যমে পুরো পদ্মা সেতুর ৪১৫টি বাতি জ্বালানো হয়।

 

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতুতে বৈদ্যুতিক বাতি রয়েছে ৪১৫টি। আর দু’পাশের সংযোগ সড়কে রয়েছে আরও ২০০ বাতি। গত বছরের ২৫ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে প্রথম ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল এসব ল্যাম্পপোস্ট বসানো ও বাতি লাগানোর কাজ শেষ হয়। এরপর পুরো সেতুতে কেবল টানা হয়েছে।