নিজেরা অঘটন ঘটিয়ে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পদ্মাসেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে আশঙ্কা করেছেন তা কেন? সবই তো আপনার নিয়ন্ত্রণে। আপনার এত বাহিনী, এত গোয়েন্দা সংস্থা তাহলে তারা কী করে? এটাকেই বলে যে, ঠাকুর ঘরে কে রে? আপনার হাতে সবকিছু আর আপনিই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন! আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো বিএনপির মৃত নেতার নামেও মিথ্যা মামলা দেয়। কিন্তু আমাদের আশঙ্কা হয় যে, আপনার লোকেরা কী এমন অঘটন ঘটিয়ে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেবে!

সরকার নাকি নিজের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ করেছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। বরং চীনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পদ্মাসেতু করা হয়েছে। যার ঋণের বোঝা আমাদের সবাইকে শোধ করতে হবে। আসলে যে টাকা খরচ হওয়ার কথা তা হয়নি। বরং বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে। মূলত এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও আজকের বাংলাদেশ’ শিরোনামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনার হিংসাশ্রয়ী আচরণ তো ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আপনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মাসেতু থেকে টুস করে ফেলে দিবেন? নোবেল বিজয়ী ব্যাক্তিকে চুবাবেন। এখন তো পদ্মাসেতুর নাম শুনলেই ভয় হয়।

তিনি বলেন, পদ্মাসেতুর শুরু থেকেই সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। গোটা জাতিকে ঋণে জর্জরিত করেছে প্রধানমন্ত্রী। ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এখন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায় ঠেকেছে। আর কত হবে তা বলা যায় না। একটি শিশুও জন্মের পর থেকেই ঋণে জর্জরিত।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যারা মানুষের স্বাধীনতা হরণ করতে গিয়ে নির্যাতন নিপীড়ন করেছে তারা তো ফ্যাসিস্ট। আজকে ফ্যাসিবাদ আবারও দেখছি। যেমনটি ছিল ১৯৭৫ সালে। তবে এখন কিছুটি পরিবর্তন হয়েছে মাত্র। ইতালিতে যে ফ্যাসিজম ও জার্মানির নাৎসীবাদের আরেক রূপ বাংলাদেশে আওয়ামী বাকশাল বা ফ্যাসিবাদ। ১৯৭৫ সালে বাকশাল করেছিল আওয়ামী লীগ। সেসময় ৪টি বাদে অন্যসব গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছিলো। সেই আওয়ামী লীগ আবারও ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে কালো আইন করেছে।

এই আইনের মাধ্যমে বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে বলে মত রিজভীর। তিনি বলেন, এই আইনে মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। আদতে গণমাধ্যমের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা পরিকল্পিতভাবে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বিএনপি হচ্ছে বাকস্বাধীনতার পক্ষে। বিএনপির শাসনামলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকার মিডিয়াকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে। আওয়ামী লীগ আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না। এখন অনেক গণমাধ্যম দেখা যায় ঠিকই কিন্তু সরকার সেগুলোকে ভয় ভীতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে। যার উদাহরণ এখন পদ্মাসেতু নিয়ে সব গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত করা হচ্ছে। এটিই তো ফ্যাসিবাদ। কই খালেদা জিয়ার শাসনামলে তো অসংখ্য ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে, সেসময় তো এমন ঢাকঢোল পেটানো হয়নি।