খালেদা জিয়ার সুষ্ঠু চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখনো সুস্থ হননি। তার সুষ্ঠু চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। করোনার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় তাকে বাসায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হবে- এমনটাই জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. এফএম সিদ্দিক বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখনো ঝুঁকিতে আছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নেওয়ার সুযোগ এখন মোটামুটিভাবে আছে। এখন পর্যন্ত বিমানে ভ্রমণ করার শারীরিক সক্ষমতা আছে। উনার সবগুলো জটিলতার চিকিৎসা করতে হলে বা সুস্থ করতে হলে, যা করার দরকার তা দেশে আমরা পুরোপুরি করতে পারছি না।সেই সক্ষমতা, মেডিকেল সেটআপ আমাদের এখানে নেই। তার সুষ্ঠু চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।’

চিকিৎসকরা বলেন, ‘হার্টের যে ঝুঁকি নিয়ে খালেদা জিয়া হাসপাতালে এসেছিলেন, সেটা এখন স্থিতিশীল আছে। কিন্তু তিনি এখনো সুস্থ হননি। তবে দেশে নতুন করে করোনা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে তাকে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।’

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘শি ইজ ডুইং ফাইন। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি (খালেদা জিয়া) কোভিডে আক্রান্ত হলে ক্রিটিক্যাল পজিশনে চলে যেতে পারেন। তাই তাকে আমরা বাসায় রেখে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন হলে তাকে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। আজকে ৬টা নাগাদ তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’

ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদার আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার খাদ্যনালীর যে সমস্যা ছিল, সেটি এখন কী অবস্থায় আছে- তা দেখা সম্ভব হয়নি। কারণ সেই ধরনের পরীক্ষা করার মতো এই মুহূর্তে তার শারীরিক অবস্থা নেই।’

মেডিকেল বোর্ডের আরেক চিকিৎসক ডা. এফএম সিদ্দিক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ফুসফুসে পানি চলে এসেছিল। পরে বিশেষ ইনজেকশন দিয়ে সেই পানি সরানো হয়। এখন তার হার্টে পানি নেই।আমরা তাকে এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে বাসা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে পারছি। আর বাসায় প্রতিদিনই আমাদের মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক তাকে মনিটরিং করেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তিনি সুস্থ না হওয়ার পরও কোভিডের কারণে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

 

‘এজন্য আমার আগেও বলেছি, এখনো বলছি, তার সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’

করোনার ধরন ওমিক্রন ভয়াবহ না হলেও খালেদা জিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) আগের যে লিভার সিরোসিস, ফুসফুসের সমস্যা, সেটি এখনো আছে। তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা যে তার শারীরিক রক্তক্ষরণ বন্ধ করে রেখেছিলাম, সেটা এখন কী অবস্থায় আছে- তা জানি না। কারণ গত ছয় মাসে সেটার ফলোআপ করতে পারিনি। এখনো তার হৃদরোগের সমস্যার কারণে এন্ডোস্কোপি করা সম্ভব হয়নি।’