যশোরের মনিরামপুর উপজেলার মুক্তেশ^রী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর কুমার মল্লিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভূক্তভোগী কর্তৃক মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিলকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০১ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত অধ্যক্ষ প্রবীর কুমার মল্লিক কলেজের মৃত শিক্ষিকা সন্ধ্যা রানীর সহি স্বাক্ষর জাল করে তার মাসিক বেতন ভাতার টাকা উত্তোলন করে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে পকেটস্থ করে চলেছেন।
রাষ্ট্র বিজ্ঞানের শিক্ষিকা বিউটি মন্ডলের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে জাল নিবন্ধন দেখিয়ে তাকে অবৈধভাবে কলেজে নিয়োগ দিয়েছেন। ভূগোল বিষয়ের শিক্ষক বৈদ্যনাথ মল্লিকের একাধিক বিষয়ে তৃতীয় বিভাগ থাকা স্বত্বেও তার কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে অধ্যক্ষ তাকে দ্বিতীয় বিভাগের জাল সনদে নিয়োগ দিয়েছেন। শিক্ষিকা রেখা রানী মন্ডল এক মাসের মেডিকেল ছুটি নিয়ে ভারতে যান।
এগারো মাস পর তিনি ভারত থেকে দেশে ফেরেন। এই দীর্ঘ ১১ মাস ধরে অধ্যক্ষ রেখা রানীর সহি স্বাক্ষর জাল করে মাসিক বেতন ভাতার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। তাছাড়া রেখা রানীকে কর্মে যোগদানের আগে তার কাছ থেকেও চাহিদা মাফিক উৎকোচ গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের শিক্ষিকা মল্লিকা মন্ডল ছুটি নিয়ে পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে যান। ৯মাস ভারতে অবস্থানের পর তিনি দেশে ফেরেন। তার সহি স্বাক্ষরও জাল করে অধ্যক্ষ ৯ মাসের বেতন ভাতার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।
বিগত ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কলেজের সভাপতি ছিলেন মনিরামপুর উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত আনোয়ার। ওই সময় ইউএনও রাহাত আনোয়ার অধ্যক্ষ প্রবীর কুমার মল্লিকের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা তছরুপের অভিযোগ পান। পরে ইউএনও রাহাত আনোয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে অধ্যক্ষের দাখিলকৃত ভুয়া বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেননি। রাহাত আনোয়ার অন্যত্র বদলী হয়ে গেলে অধ্যক্ষ নিজেই ইউএনওর সহি স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া বিল ভাউচারের অনুমোদন দেন।
এভাবে অধ্যক্ষ একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি করে চললেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি অদ্যাবধি। এব্যাপারে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মুক্তেশ^রী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ২/৩টি দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্থ হলে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বহুবিধ দুর্নীতির হোতা অধ্যক্ষ প্রবীর কুমার মল্লিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেন। সচেতন এলাকাবাসীর অভিমত গোপনে তদন্ত হলে অধ্যক্ষ প্রবীর কুমার মল্লিকের আরও কুর্কীতি বেরিয়ে আসবে।