ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত, এগিয়ে দ্রৌপদী মুর্মু!

ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ জুলাই। দেশটির সংবিধানের ৬২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির পূরণ করতে ভারতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় দেশটির পার্লামেন্ট ও রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।

ভারতের সংবিধানের ৫৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হয়ে থাকে। নির্বাচনে দেশটির ৪ হাজার ৮০০ এমপি ও এমএলএ নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আগামী ২১ জুলাই ভোট গণনার ফল ঘোষণা করা হবে। ২৪ জুলাই বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোভিন্দের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরদিন ২৫ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন।

নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) মনোনীত প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু ও বিরোধীদলীয় প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেস নেতা যশবন্ত সিংহের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। তবে নির্বাচনে যশবন্তের থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছেন মুর্মু।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, দ্রৌপদী মুর্মুর রাষ্ট্রপতি হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। যশবন্ত সিংহের সঙ্গে তার লড়াই কি অনেকটাই প্রতীকী বলা যায়।

নির্বাচনে ভোট দিতে হুইল চেয়ারে করে সংসদে পৌঁছান কংগ্রেস সাংসদ তথা ভারতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। ভোট গ্রহণের শুরুতে নিজের ভোট দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এদিকে দ্রৌপদীকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে ৩৬টি রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে যশবন্তের পক্ষে আছে ১৬ দলের সমর্থন। এনডিএ ধারণা করছে, ৬৪ বছর বয়সী দ্রৌপদী মুর্মু ৬২ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হবেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিততে ন্যূনতম ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়।

দ্রৌপদী মুর্মু নির্বাচিত হলে তিনি হবেন ভারতের প্রথম আদিবাসী নারী যিনি দেশটির সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হবেন। এর আগে এক বক্তব্যে দ্রৌপদীর বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস আছে দ্রৌপদী একজন অসাধারণ প্রেসিডেন্ট হবেন।

১৯৫৮ সালের ২০ জুন ওড়িশার ময়ুরভাঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করনে দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি ভারতের সবথেকে প্রাচীন এবং বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মেয়ে। মুর্মু ১৯৯৭ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন। প্রায় কয়েক দশক ধরে তিনি বিজেপি’র জন্য কাজ করছেন। ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের নবম রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ওড়িশা রাজ্য থেকে আসা মুর্মু হলেন ঝাড়খণ্ডের প্রথম রাজ্যপাল যিনি পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেন।

রাজ্য রাজনীতিতে আসার আগে মুর্মু একজন স্কুল শিক্ষক হিসাবে শুরু করেন। তিনি শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, রায়রংপুরে একজন সহকারী অধ্যাপক এবং ওড়িশা সরকারের সেচ বিভাগে জুনিয়র সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন রাজ্যে বিধায়কদের ভোটের মূল্যায়ন একেক রকম হয়। উত্তরপ্রদেশে প্রতিটি বিধায়কের ভোটের মূল্যায়ন ২০৮, তার পরে ঝাড়খণ্ড এবং তামিলনাড়ুতে বিধায়কদের ভোটের মূল্যায়ন ১৭৬। মহারাষ্ট্রে, এটি ১৭৫, পশ্চিমবঙ্গে ১৫১। এদিকে সিকিমে প্রতি বিধায়কের ভোটের মূল্যায়ন সাত, নাগাল্যান্ডে এটি নয় এবং মিজোরামে আট।