বর্জ্য ফেলে ভৈরব নদ দুষণ ১০৬ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার নির্দেশনা

বর্জ ফেলে ভৈরব নদ দুষণ করায় যশোরে আইনের জালে ফেসে যাচ্ছে ১০৬ প্রতিষ্ঠান । এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রোববার জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা থেকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। সভায় পরিবেশের জন্য মারাতœক হুমকি এই দুষণ রক্ষায় পৌরসভা,পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সার্বিক সহায়তা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রফিকুল হাসানের স ালনায় অনুষ্ঠিত সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আলোচনা পর্বে ওঠে আসে ভৈরব নদ খনন ও দুষণের বিষয়টি। শহর অংশে নদ খননে সরুকরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সাংবাদিক ফারাজী আহম্মেদ সাঈদ বুলবুল। এ সময় অন্যান্য সদস্যরাও এ আলোচনায় যোগ দিয়ে নদী দুষণের বিষয়টি তুলে ধরেন। জবাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ভৈরব নদ খনন প্রায় সমাপ্তির পথে। রাজার হাটের ব্রিজ এবং বসুন্ধিয়ার ক্রস বাধ উঠিয়ে দিলেই নদে জোয়ার-ভাটা আসবে। শহর অংশে নদ সরুকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিএস ম্যাপ অনুযায়ী খনন করা হচ্ছে নদ। তিনি বলেন, নদের জন্য এখন মারাতœক হুমকি হচ্ছে বর্জ্য। শহরের অংশে বেশিরভাগ ক্লিনিক,বেসরকারি হাসপাতাল এবং নদের দুই পাড়ের অধিকাংশ বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের কাচাঁ বর্জ্য সরসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। যা পরিবেশের জন্য ভয়ংকর ক্ষতি কারক। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শহরের অংশে ১০৬ টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে। যারা সরাসরি নদীতে বর্জ্য ফেলছেন। তাদেরকে বারবার সর্তক করা হলেও তারা আইন মানছে না। এসময় জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ভৈরব নদ খনন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রকল্প। প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে এই খনন কাজে। যশোরে ঐতিয্য এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রবাহমান নদ অত্যাবশ্যকীয়। এখন যদি দুষন রক্ষা করতে না পারি তা হলে আর কখনও সম্ভব হবে না।

তিনি এক পর্যায় বলেন, জেলা প্রশসনের কার্যলয় থেকেও যদি নদ দুষন করে থাকে তা হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে কেউ ছাড় পাবে না। তিনি এব্যাপাওে সংশ্লিষ্ঠ সকলকে সহযোগিতা করার আহবান জানান। পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি সুত্র জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও দেয়া তালিকানুযায়ী প্রাথমিকভাবে নদ দুষণকারীদেও সময় বেধে দিয়ে নোটিশ করা হবে। সময় অতিক্রমের পর নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা। প্রাথমিক পর্যায় যে ১০৬ প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে পৌর সভার ড্রেন,রাজধানী হোটেল, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে একতা হসপিটাল, মডার্ণ হসপিটাল, ইউনিক হাসপাতাল, অর্থপেডিক্্র হাসপাতাল, পপুলার, লাবজোন ও দেশ ক্লিনিক, ডা. আতিকুর রহমানের কিংস হাসপাতাল, স্বপন সরকার ও মনুছুর আহমেদের বাথ রুমের পাইপ। লোন অফিস পাড়ার হাবলুর বাড়ি, এ্কই এলাকার মমতাজ উদ্দিন গরুর খামার, লিচুতলার ব্রিজ সংলগ্ন জাহাঙ্গীর কাদের,আসলামের বাড়ি,মহম্মদ আলীর বাড়ি, হাসানুর রহমানের বাড়ি ও বিস্কুট ফ্যাক্টরীর বর্জ্য, নীলগ সাহা পাড়ার সেলিমের বাড়ির পাইপ লাইন, আনিছুর রহমানের কল ও বাথরুম, মহম্মদ নাসিনের পানির পাইপ, সেলিম রেজার বাথরুম, আনোয়ার হোসেনর বাথরুম,বাবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর মোল্যা, বুল ুগাজী, হাবিব পান্নু, শেখ ফজলে আলীর , ইংগুল আলী, রাকিব হোসেন ,দাউদ হোসেনর , মহসীন শেখের ও বিকাশ বিশ^াসের বাথরুম, মোল্যাপাড়ার রিনার পানির লাইন, ফজলুল করিম টুটুল,মাসুম খন্দ্কার.শফিয়ারের বাথরুম,নীল গ এলাকার সাহেব আলী, মাসুম বিশ^াস ,মফিজ, সোলেমান, হাফিজুর রহমান ওসাত্তারের বাথ রুম,ঝুমঝুমপুর নদের পাড়ে হাসানুর রহমান,আজহার মোল্যা, রাশিদা বেগম, ডা.শরিফুল ইসলাম,রনি সরদার,নার্গিস সামাদ,ফরিদা বেগম, ফারুক হোসেন, কাজী বুলবুল,বদ্ধ মিয়া হাজী, সফি, মাসুদ,হেমায়েত শেখ ও কাজী আবুল হোসেনের বাথরুম।

ঝুমঝুমপুর বালিয়াডাঙ্গার মিজানুর রহমান, পৌর সভার ড্রেন, রুহুল আমিন, মনিরুজ্জামান, আকরাম হোসেন, শাহাদাত হোসেন, সুবল বাবুর মাছ ফ্যাক্টরী, লালন ভুইয়া, ফরিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম, মাসুদ রানা, কালাম মিয়া, আব্দুল কাদের, রাশিদা বেগম, ইকবালের গরুর খামার,মিলন হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মান্নান শেখ, কৃ বিশ^াস, জাহাঙ্গীর খান, শহিদুল ইসলামের বাথরুম, নীগ তাতিপাড়ার আফিয়া বেগম, আসকর মুন্সি, সৈয়দ রাশেদুল, মুজিবার ব্যাপারী, সোহেল আমিরুল মোল্যা ও শেখ আব্দুর রহিমের বাথরুম। সূত্র জানায়, নদ দুষণকারীদের চুড়ান্ত তালিকা আরো লম্বা হতে পারে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক সর্তকতার পর নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।