যশোরে দুর্নীতিবাজ মৎস্য কর্মকর্তা সাংবাদিকদের উপর চটেছেন

অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশ হওয়ার পর তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছেন যশোর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা। তার দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিষেদাগার করে যাচ্ছেন মাছ খেকো মৎস্য কর্মকর্তা। সেই সাথে তিনি জব্দকৃত মাছ বিক্রেতাদের ডেকে এন বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। কে এ তথ্য সাংবাদিকদের কাছে তথ্য সরবরাহ করছে তার কৈফৎ চাচ্ছেন।

এদিকে, মৎস্য কর্মকর্তার বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি বের হতে শুরু হয়েছে। তিনি যে সব স্থানে এর আগে কর্মরত ছিলেন সেখানেও একইভাবে অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র জানায়, ১৭ জুলাই যশোর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে দুর্নীতির খবর প্রকাশ হয়। এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। তিনি সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। নিজেকে সৎ কর্মকর্তা দাবি করে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেন। ওই অভিযানে জেলি পুষকৃত মাছ জব্দসহ ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেন। আবার জব্দকৃত মাছ অবৈধভাবে তিনি বিক্রি করে দেন।

এ খবর প্রকাশ হওয়র পর তিনি মাছ বিক্রেতাদের ডেকে এনে হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যে মাছ ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের কাছে জব্দকৃত মাছ বিক্রির খবর দিয়েছে, তাকে তিনি দেখে নেবেন। সে কিভাবে মাছ ব্যবসা করেন তাও তিনি দেখবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা যশোর সদরে যোগদানের পর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। কিভাবে অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করা যায় সে সব পথ অবলম্বন করতে থাকেন। তিনি উপজেলার ইউনিয়ন ভিত্তিক রেস্ট্রিশন বিহীনদের সিআইজি সমিতির কাছে সরকারি মাছের পোন বিতরণের নামে বিক্রি করেছেন। আবার রেজিস্ট্রেশন বিহীন সমিতির সভাপতি-সম্পাদকদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে আদায় করেছেন মোটা অংকের অর্থ। এতে করে সরকারের যে মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। মৎস্য চাষিরা সরকারি মাছের পোনা টাকা দিয়ে ক্রয় করে চাষ করছেন। বিষয়টি উপজেলা পরিষদ চত্বরে জানাজানি হলে এক পর্যায়ে মাছ দেওয়া বন্ধ করে দেন।

সূত্র জানায়, মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজার বাড়ি পাশ্ববর্তী সাতক্ষীরা জেলায়। সাতক্ষীরাঞ্চলে নোনা পানির কারণে চিংড়ি মাছ বেশি চাষ হয়। এ অঞ্চলে তার বাড়ি হওয়ার কারণে চিংড়ি চাষিদের সাথে রয়েছে সুসম্পর্ক। মৎস্য কর্মকর্তা হওয়ার কারণে মাছ চাষি ও ব্যবাসীয়দের কাছ থেকে মাসিক মসোহারা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যে সব চাষি ও ব্যবসায়ী তার চাহিদামত টাকা না দেয় তার বিরুদ্ধে সোর্স ঠিক করেন। এর ওই চাষি কিম্বা ব্যবসায়ী মাছ যখন বিক্রির জন্য সরবরাহ করেন তাদেরকে হয়রাণির নামে গাড়ী আটক করেন। এরপর দরাদম শুরু করেন। দরাদাম ঠিক হলে তিনি তাদেরকে ছেড়ে দেন। টাকা না দিলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করেন।

অপর একটি সূত্র জানায়, মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা ছাত্রবস্থায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের রাজনীতি করতেন। তার পরিবারও জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। যশোরের জামায়তের নেতাদের সাথে তার দহরম-মহরম সম্পর্ক রয়েছে বলে সূত্র জানায়। তার মত একজন জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার কিভাবে এখনো বহাল তবিয়তে সরকারের একটি মহৎ কার্যালয়ে বহাল রয়েছে সেই প্রশ্ন যশোরের মৎস্য চাষিদের।
সূত্র মতে, মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজার চরিত্রও নিয়েও বিভিন্ন কথাবার্তা কানাঘোষা রয়েছে।
অবিলম্বে এই দুর্নীতিবাজ মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন যশোরের সাধারণ মৎস্য চাষি ও ব্যবসায়ীরা।