যশোরে বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, হত্যাপ্রচেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

jessore map

যশোরে জোরপূর্বক জমি দখল, বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, হত্যাপ্রচেষ্টা, শ্লীলতাহানীর চেষ্টাসহ বর্বরোচিত পাশবিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ঝিকরগাছা উপজেলার ১১ নং বাকড়া ইউনিয়নের উজ্জলপুর গ্রামের ৬ পরিবারের সদস্যরা রোববার বেলা ১২ টায় সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই অভিযোগ করেন ওই গ্রামের গণেশ চন্দ্রপালের ছেলে উত্তম কুমার পাল।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, উজ্জালপুর মৌজার ১৯৩ নং আর এস দাগে আমার পিতা গনেশচন্দ্রপালসহ গোবিন্দপাল, গোপালপাল, বিশ্বজিতপাল, ইন্দ্রজিতপাল, সরস্বতীপাল, চায়নারানিপাল, জামশেদ আলীর ৩৮৮, ৩৬১. ৬৫৮ ও ১১১৯ আর এস খতিয়ানে ৭২ শতক জমি আছে। যা একশ বছরের অধিক সময় ধরে আমরা ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু সম্প্রতি লাঠিয়াল পরসম্পদ লোভি, চরিত্রহীন, লম্পট, দূবৃত্ত একই গ্রামের আমিন, মহব্বতআলী ও আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে জগন্নাথ বিশ্বাস, নিমাই বিশ্বাস, রনজিৎ বিশ্বাস, সন্তোষ বিশ্বাস, শুভদেব বিশ্বাস, শওকত ও মিন্টু জমি দখলের চেষ্টাসহ জমির সকল মালিককে প্রান নামের হুমকি প্রদান করে আসছে। এমনকি জমিতে কাজ করতে গেলে ওই সব সন্ত্রাসীরা দেশিয় অস্ত্রসহ আক্রমন করে। বাধ্য হয়ে ১১১৯ আর এস খতিয়াতের জমির মালিক জামসেদ আলী বাদি হয়ে আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় ফৌজদারি কার্যবিধি আবেদন করে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে মামলা নং পি ৩৭৭/২২ এর স্মারক নং ৬৯৭ বিষয়টি তদন্তের জন্য নোটিশ পাঠায়। যা বর্তমানে বিচারধীন আছে।

ওই মামলায় উত্তমপাল স্বাক্ষী হওয়ায় ১০ এপ্রিল বিকেলে একই গ্রামের সন্তোষ বিশ্বাসের ছেলে নিমাই বিশ্বাস, মৃত সত্যপদ বিশ্বাসের ছেলে জগন্নাথ বিশ্বাস, রনজিৎ বিশ্বাসের ছেলে রামদেব বিশ্বাস ও শুকদেব বিশ্বাস, মৃত শ্যামপদ বিশ্বাসের ছেলে রনজিৎ বিশ্বাস ও সন্তোষ বিশ্বাস, আমার বসত বাড়ির উঠানে এসে আমাকে গালিগালাজ করে ও বাইরে আসতে বলে। আমি ঘরের বাইরে এলে আদালতে জামসেদ আলীর দায়ের করা মামলার থেকে স্বাক্ষী হিসেবে আমার নাম প্রত্যাহার ও আমার জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করার অনুমতি দিতে বলে। তা না হলে আমাকে জীবনে শেষ করে দেয়ার হুমকি দেয়। বলে খুন জখম করে পলিথিনে ভরে লাশ গুম করে দিব। আমি তার কথায় রাজি না হলে আমাকে মারতে উদ্যত্ত হয়। এ ঘটনায় আমি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিািধ আইনে ১০৭/১৪৪/১১৭ ধারায় মামলা দায়ের করি। ১৫ জুন বিকেলে মোহম্মদ আমিন, হাসান, রঞ্জন, মিন্টু, জগন্নাথ বিশ্বাস আমার পৈত্রিক সম্পত্তিতে মাছের ঘের তৈরির উদ্দেশ্যে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন করার সময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাকে ধাওয়া করে।। আমি অজিত পালের বাড়ি গিয়ে আতœ গোপন করি। সন্ত্রাসীরা আমাকে না পেয়ে আমার বাড়ি গিয়ে আমার স্ত্রী আলপনা পাল পিতা মাতাকে উদ্দেশ্যে করে অশ্লীল অ¤্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও তাদের উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা আমার স্ত্রীকে জাপটে ধরে। আমার পিতা মাতা ও সন্তানদের বেধড়ক মারপিডট করে। সন্ত্রীরা আমাকে বাড়িতে না পেয়ে ঘরের আসবাব পত্রসহ বিভিন্ন জিনিস ভাংচুর ও লুটপাট করে। এরপর সন্ত্রাসীরা অজিতপালের বাড়ি থেকে আমাকে ধরে এনে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে রক্তাত্ত জখম করে। আমি মৃত ভেবে তারা ফেলে রেখে চলে যায়।

প্রায় ২ ঘন্টা যাবৎ সন্ত্রাসী এই তান্ডব চালিয়ে পালপাড়ায় ত্রাস সৃষ্টি করে। এঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়। আসামিরা জামিনে বের হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ১৭ জুন আমার স্ত্রী আমাকে হাসপাতাল থেকে দেখে বাড়ি আসা আগেই রঞ্জন বিশ্বাস, মিন্টু, শুভদেব শওকত, নিমাই বিশ্বাস, জগন্নাথ বিশ্বাসসহ অজ্ঞাত নামা কয়েকজন আমার বাড়ির সামনে এসে অপেক্ষা করছিলো। আমার স্ত্রী বাড়ি ঢোকর সময় ওই সব সন্ত্রীরা আমার স্ত্রীর মুখ চেপে জড়িয়ে ধরে। পরনের বাøউজ টেনে হেচড়ে ছিড়ে ফেলে। শাড়ি খোলার চেষ্টা করে। এঘটনায় আমার স্ত্রী আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাচার জন্য আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণেশপাল, আলপনাপাল, শেফালিরানিপাল, গোপাল চন্দ্রপাল ও পারুল বালা প্রমুখ।