২ ইউপি মেম্বারের টিসিবির পণ্য আত্মসাতের চেষ্টা, রুখে দিলো বিক্ষুদ্ধ জনতা

 

নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই মেম্বারের বিরুদ্ধে টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) ৭৮ কেজি ডাল ও ৫০ কেজি চিনি আত্মসাত চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ জনতা সেই ডাল ও চিনি জব্দ করে দোষীদের বিচার দাবি করেন।

শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আউড়িয়া ইউনিয়নের মাদরাসা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর রোববার সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।

 

প্রত্যক্ষদর্শী নাকসী গ্রামের মশিয়ার সিকদার বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভ্যানযোগে চিনি ও ডাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বস্তার গায়ে টিসিবি লেখা দেখে উপস্থিত লোকজনের সন্দেহ হয়। তখন ভ্যানচালক তুহিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, নাকসী মাদরাসা বাজারের মুদি দোকানদার জহির শেখ এসব পণ্য স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যেতে বলেন।

 

এ ব্যাপারে মুদি দোকানদার জহির শেখ বলেন, আউড়িয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্বাস আলী ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মিজানুর রহমান এসব ডাল ও চিনি বাসস্ট্যান্ডের দিকে নেয়ার জন্য ভ্যান ডেকে দিতে বলেছেন। এসব টিসিবির পণ্য তা আমার (মুদি দোকানি) জানা ছিল না।

 

প্রত্যক্ষদর্শী বিপ্লব মোল্যা জানান, জব্দকৃত টিসিবির পণ্যের মধ্যে এক বস্তায় ৫০ কেজি চিনি এবং কয়েকটি প্যাকেটে ৭৮ দশমিক ৭০০ কেজি ডাল পাওয়া গেছে। দুই মেম্বর সরাসরি না এসে বাজারের মুদি দোকানদার জহির শেখকে দিয়ে এসব পণ্য সরিয়ে নিচ্ছিলেন। ডালের কিছু প্যাকেট কাটাও ছিল।

 

অভিযুক্ত মেম্বার মিজানুর রহমান জানান, টিসিবির পণ্য বিক্রির পর কিছু চিনি ও ডাল বাড়তি ছিল। সেগুলো ভ্যানযোগে অন্য জায়গায় নেয়া হচ্ছিল। আর প্যাকেটগুলো কাটা হয়নি, ছেঁড়া ছিল।

 

অপর মেম্বার আব্বাস আলী বলেন, কিছু চিনি ও ডাল গাড়িতে ছিল। পরে তা ইউনিয়ন পরিষদের সিঁড়িতে রেখে দিয়েছিল। এসব মালামাল কে নিয়ে যাচ্ছিল, তা আমার জানা নেই।

 

আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম পলাশ বলেন, গত শনিবার আমি উপস্থিত থেকে টিসিবির কার্ডধারীদের মধ্যে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করেছি। বিকেলে শোক দিবসের কর্মসূচিতে চলে যাই। পরে চিনি ও ডাল আটকের খবর জানতে পারি। আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

 

নড়াইল সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্ব) মাহমুদুর রহমান বলেন, খবর শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। আটককৃত পণ্যের তালিকা করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

 

এ ব্যাপারে তথ্য জানতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।