২০৪১ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সরকার রূপকল্প ২০৪১ এর মাধ্যমে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় দেশের ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি (এনরোলমেন্ট) নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষিত ডিগ্রিধারীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতেই হাতে নেওয়া হয়েছে এই কার্যক্রম।

‘ইউসেপ জার্নি : বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড চেইনী’ শিরোনামে বেসরকারি সংস্থা ইউসেপ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি অনলাইনে যুক্ত হয়ে এ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে গেস্ট অফ অনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নিউজিল্যান্ডের হাই কমিশনার ডেভিড পাইন।

ডা. দীপু মনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা নেওয়ার আগে ২০০৯ সালে কারিগরিতে এনরোলমেন্ট ছিল মাত্র ১ শতাংশ। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ২০২০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ নিশ্চিত করার টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। তখন এটা অনেকেই উচ্চাভিলাসী মনে করেছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে এনরোলমেন্ট হয়েছে ১৭ শতাংশের বেশি। আমরা চাই ২০৪১ সালের মধ্যে কারিগরিতে ৫০ শতাংশ এনরোলমেন্ট করতে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, দেশের প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। অনেকে মনে করেন কারিগরিতে কম মেধাবীরা পড়াশোনা করে। তাই মাইন্ডসেট পরিবর্তন ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

দীপু মনি ১৯৭২ সাল থেকে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে অসামান্য অবদানের জন্য ইউসেপ বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং আইসিটি বিষয়ক পেশাগত দক্ষতা, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং কোর্সের উপর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শুরু করার জন্য ইউসেপকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি আরও বলেন, ইউসেপের এসব কার্যক্রম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। বঙ্গবন্ধু নিজেই ইউসেপকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম-সচিব ড. মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, ইউসেপ বোর্ড অফ গভর্নরস প্রাক্তন চেয়ারপারসন উবাইদুর রব ও আহমদুল্লাহ মিয়া এবং নিউজিল্যান্ড কনস্যুলেটের (বাংলাদেশ) অনারারি কনসাল নিয়াজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউসেপ বাংলাদেশের চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ এফসিএ। অনুষ্ঠানে প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. মোঃ আবদুল করিম। তিনি অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত নিউজিল্যান্ডের হাই কমিশনার ডেভিড পাইন বলেন, বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার চমৎকার ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতেরও আগামীতে এগিয়ে নেওয়া হবে। এদেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও যুবকদের জন্য কারিগরি শিক্ষার প্রসারের উপর বাংলাদেশ সরকার এবং ইউসেপের আগ্রহ ও সক্ষমতা দেখে তিনি খুবই আনন্দিত বলে জানান। এ ধরনের কার্যক্রম সম্প্রসারণে তিনি তার দেশের সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব রকম সহায়তার আশ্বাস দেন। এ সময় কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্ট বাড়ানোর মহাপরিকল্পনা করায় সরকারের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি।

ইউসেপ চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ এফসিএ তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সুবিধা বঞ্চিত শিশু কিশোরদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে যথাযথ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্য ইউসেপ এর প্রতিষ্ঠাতা লিন্ডসে অ্যালান চেইনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সবশেষে ইউসেপ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।