২৪ দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের কাছে মিয়ানমারে ফেরার আকুতি রোহিঙ্গাদের

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের কমান্ডিং জেনারেল চার্লস এ ফ্লিনসহ ২৪ দেশের সামরিক কর্মকর্তারা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির পর্যবেক্ষণ করেছেন। এসময় নারী-শিশুসহ ২২ জনের একটি রোহিঙ্গা দলের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

মঙ্গলবার দুপুরে ২৪ দেশের সিনিয়র সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে উখিয়ার কুতুপালংয়ের এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪ এ পরিদর্শনে যান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। যার মধ্যে কয়েকটি দেশের সেনাপ্রধানও ছিলেন বলে জানা গেছে।

তারা সেখানে দরবার হলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ আয়োজনে চলমান ‘৪৬তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মিজ ম্যানেজমেন্ট সেমিনার (আইপিএএমএস)-২০২২’-এ অংশ নেন। এসময় তাদের কাছে ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন জাতিসংঘের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা। তিনি আশ্রয় শিবিরে পাঁচ বছর ধরে ১২ লাখ রোহিঙ্গার জীবনমান, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও নিরাপত্তা কীভাবে দেওয়া হচ্ছে সেটি তুলে ধরেন।

দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে সেখানে রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন সামরিক কর্মকর্তারা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ ওসমান বলেন, আমরা তৃতীয় কোনো দেশ নয়, আমাদের দেশেই ফিরতে চাই। সেনা কর্মকর্তাদের আমরা জানিয়েছি, আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি করা হোক।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, ২৪টি দেশের সেনা কর্মকর্তাদের সামনে বর্তমান রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গারা কী ধরনের সুযোগ–সুবিধা পাচ্ছেন, তা নিয়ে কথা হয়েছে। এসময় সেনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। বৈঠক শেষে সেনা কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী একটি দলের সঙ্গেও কথা বলেন।

আরেক রোহিঙ্গা সেলিম মিয়ানমারে নিজেদের ওপর চলা বর্বরোচিত অত্যাচার নিপীড়নের কথা তুলে ধরে বলেন, তৃতীয় কোনো দেশে নয়, নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত যেতে সহযোগিতা করুন আমাদের।

এর আগে সকালে কক্সবাজারের ইনানীর একটি হোটেলে ৪৬তম ইন্দো প্যাসিফিক আর্মিজ ম্যানেজমেন্ট সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের প্রতিপাদ্য ছিল ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতা বাড়াতে সামরিক কূটনীতি। এই সম্মেলন অত্র অঞ্চলের স্থলবাহিনীগুলোর বৃহত্তম সমাবেশ। যার মূল উদ্দেশ্য পারস্পরিক বোঝাপড়া, সংলাপ ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আরও বৃদ্ধি করা।