যশোর শহরের পুরাতন কসবা কাজিপাড়া আমবাগানে থমথমে অবস্থা

jessore map

যশোর শহরের পুরাতন কসবা কাজিপাড়া আমবাগানে বোমা বিষ্ফোরণ ও গুলি বর্ষনের ঘটনার পর ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েলের ক্যাডারদের এলাকায় সন্দেহ জনক ঘোরা ফেরা করতে দেখা গেছে। জেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনায় কোতয়ালি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসির আশংকা এঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারো পুরাতন কসবায় প্রানহানির ঘটনা ঘটতে পারে। ওসি বলেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে পুরাতন কসবা কাজিপাড়া আমবাগানে বাবুর লন্ডির দোকানের সামনে বোমা বিষ্ফোরণ ও গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, দলীয় গ্রুপিং ও এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই বোমা বিষ্ফোরণ ও গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে। যশোরে আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দল নতুন কোন ঘটনা নয়। আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দল দীর্ঘ দিনের। পুরাতন কসবায় দলীয় কোন্দলে এ পর্যন্ত অন্তত ডজন খানিক নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। মাঝে বেশ কিছু সময় পুরাতন কসবা কাজিপাড়ায় দলীয় কোন্দল থেমে ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই শুক্রবার রাতে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দলীয় কোন্দল চাঙ্গা হয়ে উঠে। যশোর-৩ (সদর) আসনের এমপি জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য কাজি নাবিল আহমেদের সমর্থক গ্রুপের সাথে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের এমপি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদারের সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি ও বোমা বিষ্ফোরনের ঘটনা ঘটে। এমপি কাজি নাবিল আহমেদের সমর্থক ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন ও যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ আলম অভিযোগ করেন, পুরাতন কসবা আমবাগান এলাকায় অজ্ঞাত এক কিশোর বার্মিজ চাকু নিয়ে ঘোরাফেরা করছিলো। তার কাছে চাকু নিয়ে ঘোরা কারণ জানতে চাওয়া হলে কিছু সময় পর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েলের নেতৃত্বে, কানা রুবেল, দুর্জয়, রাসেল, জাভেদসহ ৩০ থেকে ৪০ জন সন্ত্রাসী ফিরোজ আলমের উপর হামলা চালায়। প্রথমে জাভেদ ফিরোজকে লক্ষ্য করে একটি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমাটি ফিরোজের কানের পাশ দিয়ে যেয়ে মাটিতে পড়ে বিষ্ফোরণ হয়। এরপরে পুরাতন কসবার সিরুর ছেলে র্দুজয় দুই রাউন্ড ও আর এন রোডের কানা রুবেল ফিরোজকে লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় ফিরোজ অল্পের জন্য প্রানে বেঁচে যান।
এমপি শাহিন চাকলাদারের সমর্থক জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল অভিযোগ করেন, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ আলমের নেতৃত্বে তার বাড়িতে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় ও একটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। কারণ হিসেবে জুয়েল জানান, তাকে শাহিন চাকলাদারের সাথে রাজনীতি করতে দেবে না বলে এ হামলা চালানো হয়।
শুক্রবার রাতের ঘটনার পর পুরাতন কসবা কাজিপাড়া আম বাগান এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জনান, শনিবার সারা দিনই আমবাগান এলাকায় শফিকুল ইসলাম জুয়েলকে দেখা না গেলেও জুয়েলের ক্যাডারদের সন্দেহ জনক ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। এ সব ঘটনায় এলাকাবাসির মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। শুক্রবার রাতে বোমা হামলা ও গুলি বর্ষনের ঘটনার পর পুলিশ, র‌্যাব ঘটনা স্থলে গেলেও শনিবার পুরাতন কসবা আমবাগানে কোন পুলিশ টহল দেখা যায়নি। যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা হামলা ও গুলি বর্ষনের ঘটনায় কোতয়ালি লিখিত অভিযোগ করেছেন মোঃ শেখ নাজিম। নাজিম পুরাতন কসবা বিবি রোড আমবাগানের রফিকুল ইসলাম লাল্টুর ছেলে। কোন অভিযোগ পেয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, তিনি হাতে কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।