‘গণতন্ত্র’ ও ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা’ যুক্তের প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোর দাবি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির

‘গণতন্ত্র’ ও ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা’ যুক্তের প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোর দাবি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির
বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক সংবিধানের মূলনীতি ও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংস্কার নিয়ে দলের প্রস্তাব তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, সংবিধানের মূলনীতিতে গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতিকে যুক্ত করে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের সঙ্গে এই পাঁচটি মূলনীতি বজায় রাখার পক্ষপাতী তারা।

তবে, বর্তমান সংবিধান যেভাবে রয়েছে, তা বহাল রেখে ভবিষ্যতে পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে এই পাঁচটি বিষয় যুক্ত করার জন্য মধ্যস্থতামূলক প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের ষষ্ঠ দিনের প্রথম পর্ব শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

সাইফুল হক বলেন, সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘প্রধানমন্ত্রীকে রাশিয়ার জারের মতো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ’ তিনি এই ব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তন চান। তার মতে, সাংবিধানিক পদে নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারের বাইরে থাকুক এবং দল নিরপেক্ষ, যোগ্য, অভিজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হোক।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সাত সদস্যের সাংবিধানিক পদের নিয়োগ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীও থাকবেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এটিকে আগের প্রস্তাবের চেয়ে গণতান্ত্রিক ও গ্রহণযোগ্য মনে করলেও কয়েকটি বিষয়ে তাদের উদ্বেগ রয়েছে। তাদের মতে, এই কমিটিতে সরকারি দল বা তাদের পক্ষের লোকজনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকতে পারে এবং সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নিয়োগ হলে সরকারের পছন্দের ব্যক্তিরাই নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা আরও বলেছে, এই কমিটির কার্যপরিধি সুনির্দিষ্ট হওয়া দরকার। কোন কোন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হবে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। বিশেষ করে, মহা হিসাব রক্ষকের (অডিট জেনারেল) পদ, যা রাষ্ট্রের আয়ের সাথে সম্পর্কিত, তা কমিশনের প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়া প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, বরং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থার আওতায় কার্যকরভাবে প্রয়োগ হোক, এটাই তাদের দাবি।

সাইফুল হক জানান, এই কমিটি ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান উপদেষ্টা শপথ নেওয়ার আগ পর্যন্ত কাজ করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিলে এটি বিলুপ্ত হবে এবং নতুন সরকার গঠিত হলে পুনরায় গঠিত হবে।

কমিটির জবাবদিহিতা সুনির্দিষ্ট করার ওপরও গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যদি গোড়ায় গলদ থাকে তাহলে কোনো সংস্কার কোনো ফলাফল দেবে না।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি বিশ্বাস করে, গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে সম্পন্ন হওয়া উচিত, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল এবং জনগণ সকলের আস্থা থাকবে। তারা বিদ্যমান সার্চ কমিটি অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছে, যা প্রস্তাবনা দেবে। এই কমিটিতে স্পিকার সভাপতিত্ব করবেন এবং প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত থাকবেন, যা প্রস্তাবটিকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।