সাবেক ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত আক্রমণে ‘মর্মাহত’ বাবর

পাকিস্তান ক্রিকেটে কিছুদিন আগেও সবার চোখের মণি ছিলেন বাবর আজম। কিন্তু সময়ের কঠিন বাস্তবতার শিকার হয়ে এখন তিনি। সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে কথা বলেনি তার ব্যাট। স্ট্রাইক রেট নিয়েও তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। তবে পাকিস্তান অধিনায়ককে কষ্ট দিচ্ছে সাবেক ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত আক্রমণ।

সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে ৬ ইনিংসে বাবরের মোট রান ছিল ৬৮। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবার টানা ৬ ইনিংসে তিনি ছাড়াতে পারেননি ৩০ রান। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান হারিয়ে নেমে গেছেন তিনে। ক্যারিয়ার পরিসংখ্যানও এখনও যথেষ্ট উজ্জ্বল। তবে ক্রমশ প্রশ্ন উঠছে তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে।ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট তার এখনও খারাপ নয়, ১২৮.৮১। এই সময়ের টি-টোয়েন্টিতে যদিও ওপেনারদের কাছে আরেকটু বেশি গতি দাবি থাকে দলের।

তবে বাবরকে নিয়ে মূল সমালোচনা পাওয়ার প্লে ও প্রথম ১০ ওভারের স্ট্রাইক রেট নিয়ে। পাশাপাশি মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে তার জুটি নিয়েও ক্রমাগত উঠছে প্রশ্ন। দুজনই একটু সময় নিয়ে ইনিংস গড়তে পছন্দ করেন। এসব নিয়ে দেশের ভেতরে-বাইরে আলোচনা, সমালোচনা হচ্ছে তুমুল।
সবচেয়ে চমকপ্রদ কথাটি বলেছেন সাবেক পেসার ও পিএসএল দল লাহোর কালান্দার্সের কোচ আকিব জাভেদ। পাকিস্তান ক্রিকেটে বেশ সমাদৃত এই কোচ বলেন, ‘তার দলের কৌশল থাকে বাবরকে আউট না করা। কারণ, সে আপন গতিতে ব্যাট করে এবং দলের প্রয়োজনীয় রান রেট বাড়তেই থাকে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে আকিবের সেই কথা ধরেই প্রশ্ন ছুটে গেল বাবরের দিকে। পাকিস্তান অধিনায়ক শুরুতে তা হাসিমুখে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন, তার ভাবনা যদি এরকমই হয়, কোনো সমস্যা নেই। তার ভালো হোক।

তবে পরমুহূর্তেই হাসি উধাও হয়ে তার মুখে ফুটে উঠল কাঠিন্য। বাবর বলেন, সবারই নিজস্ব মতামত থাকতে পারে। আমি স্রেফ পাকিস্তান দল নিয়েই কথা বলতে চাই। লোকের নিজস্ব অভিমত থাকবেই। আমরা সেসবে কান দেই না বা তারা কী বলে, এসবকে পাত্তা দেই না।”

কিন্তু আদতে যে পাত্তা দেন কখনও কখনও, সেটিও ফুটে উঠল বাবরের পরের কথায়। তিনি বলেন, সাবেক ক্রিকেটাররা নিজেদের মতামত জানাতেই পারেন। তবে যেটা হতাশার, তা হলো ব্যক্তিগত আক্রমণ। সাবেক ক্রিকেটাররাও নিজেদের সময়ে এটার মধ্য দিয়ে গেছেন এবং তারা ভালো করেই জানেন, কতটা চাপ ও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয় আমাদের। আমি ব্যক্তিগতভাবে এসব মতামতকে পাত্তা দেই না। আমার কাছে এসবের কোনো মূল্য নেই।”

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ৭ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বাবরের চাওয়া, এই সিরিজ দিয়ে নিজেকে ফিরে পাওয়া। তবে সেই তাড়নায়ও মিশে থাকল সমালোচনা নিয়ে খেদ।

বাবর বলেন, আমার জন্য ব্যক্তিগতভাবে এই সিরিজ গুরুত্বপূর্ণ, চেষ্টা করব ফর্মে ফিরতে। ছন্দে ফেরার জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো অতিরিক্ত না ভাবা এবং সবকিছু সাধারণ রাখা। সবচেয়ে জরুরি হলো নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা। আমি জানি যে অতীতে ভালো করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব। কখনও ভালো সময় যাবে, কখনও নয়। যত ভালোই করুন, লোকের কথা চলতেই থাকবে। সবচেয়ে ভালো হলো এসবকে এড়িয়ে যেতে পারা।