যশোরে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষন ও গৃহবধূ ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে পৃথক দু’টি মামলা

সদর উপজেলার হামিদপুর মধ্যপাড়ায় ধর্ষন ও সিরাজ সিংঙ্গা পশ্চিমপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের এক ঘরে জোর পুর্বক ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে কোতয়ালি মডেল থানায় আদালা দু’টি মামলা হয়েছে। মামলা দু’টির মধ্যে একটি মামলায় আসামী সিরাজ সিঙ্গা পশ্চিমপাড়ার আলতাফ হোসেনের ছেলে জিল্লুর রহমান অপরটির আসামী হামিদপুর মধ্যেপাড়ার মৃত অমেদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন।

সোমবার দিবাগত গভীর রাতে মামলা দু’টি কোতয়ালি মডেল থানায় দায়ের করেছেন ধর্ষিতার পিতা ও অপরটির যৌন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ।
একটি মামলায় বাদি বলেছেন,তার মেয়ে (১৪) মাদ্রাসার ১০ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করে। বিগত মে মাসে বাদির মেয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার বাদির মেয়েকে পরীক্ষা করে জানায় মেয়ে গর্ভবতী। বাদিসহ তার স্ত্রী মেয়ের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে মেয়ে জানায় জাহাঙ্গীর হোসেন দীর্ঘ দিন পুর্ব হতে বাদির মেয়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় একাধিক বার ধর্ষন করে। সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সকাল আনুমানিক ৯ টায় বাদির মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হামিদপুর মধ্যপাড়াস্থ জাহাঙ্গীর হোসেন তার বসত বাড়ির শয়ন কক্ষের মধ্যে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। বিষয়টি কাউকে জানালে বাদি ও তার মেয়েকে হত্যা করবে বলে হুমকী দেওয়ার কারনে বাদির মেয়ে ভয়ে একদিন কাউকে কিছু বলেনি।

বাদি বিষয়টি জানতে পেরে লম্পট জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে যেয়ে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামী বাদিকে হুমকী দেয়। বলে উক্ত বিষয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করলে বাদিকে হত্যা করার হুমকী দেয়। বাদি বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানালে তারা লম্পট জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জাহাঙ্গীর হোসেন তাদেরকে সাথে খারাপ আচারন করে। লোক লজ্জার ভয়ে বাদি তার মেয়েকে মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ গ্রামে বাদির শ^শুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এক পর্যায় বাদির মেয়ে গত ৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০ টায় সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানাধীন সত্য বাজার পল্লী স্বাস্থ্য ক্লিনিক নামক হাসপাতালে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ধর্ষনের বিষয়টি গোপন করার জন্য জাহাঙ্গীর হোসেন বাদি এবং তার স্ত্রীকে তার বাড়িতে যেতে বলে।

বাদি ও তার স্ত্রী গত ৯ অক্টোবর বিকেল ৬ টায় আসামীর বাড়িতে গেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বাদি ও তার স্ত্রীকে একটি কক্ষের মধ্যে আটক করে রেখে এবং টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিমাংসা করতে বলে। বাদি ও তার স্ত্রী রাজী না হলে আসামী হুমকী দেয় যে বাদি যদি মিমাংসা না করে তাহলে উক্ত এলাকায় বাদি বসবাস করতে পারবে না। আসামী বাদি ও তার স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে হুমকী দিয়ে বাড়ি হতে তাড়িয়ে দেয়। বিষয়টি গোপন করার জন্য লম্পট জাহাঙ্গীর হোসেন প্রতিনিয়ত বাদিসহ তার স্ত্রীকে মারপিট করার হুমকী দিচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ও পারিবাকিভঅবে আলোচনা করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অপরদিকে, সদর উপজেলার সিরাজ সিঙ্গা পশ্চিমপাড়ার এক গৃহবধূ সোমবার গভীর রাতে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলায় লম্পট জিল্লুর রহমানকে আসামী করে উল্লেখ করেন, বাদি তার দুই ছেলেকে নিয়ে উল্লেখিত আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাস করে। আসামী জিল্লুর স্বভাব চরিত্র ভাল না। দীর্ঘদিন পূর্ব হতে বাদিকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করাসহ বাদিকে বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।

বাদি আসামীর কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে আসামী জিল্লুর রহমান বাদির বড় ধরনের ক্ষতি করবে বলে হুমকী দিয়ে আসছিল। গত ৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭ টায় বাদি তার ঘরের মধ্যে অবস্থান কালে জিল্লুর রহমান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাদির ঘরের দরজা খোলা পেয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে বাদিকে কু-প্রস্তাব দেয়। রাজী না হলে ঝাপটে ধরে এবং জোর পূর্বক খাটের উপর শুইয়ে পরনের কাপড় খুলে ধর্ষন করার চেষ্টা করে। বাদি ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন আসলে লম্পট দ্রুত ঘর হতে বের হয়ে পালিয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।