যশোরে তালাকপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্ত্রীকে ধর্ষণ, স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা

যশোরে তালাকপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকাকে ধর্ষণ মামলায় স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়নাজারী করেছে আদালত। গতকাল পিবিআই’র দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবীর এই আদেশ দিয়েছেন। আসামি ইয়াছিন আরাফাত সুমন শহরের মুজিব সড়ক ষষ্ঠীতলা বাইলেন শাহান ম্যানসনের মালিক রবিউল ইসলামের ছেলে।

বাদী মামলায় বলেছেন, যশোর পৌরসভার একটি সরকারি প্রাইমারী স্কুলের এক শিক্ষিকাকে ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল বিয়ে করেন আসামি ইয়াছিন আরাফাত সুমন। বিয়ের পরে দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি ছেলের জন্ম হয়। কিন্তু বিভিন্ন সময় তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে সুমন ওই শিক্ষিকাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। বাধ্য হয়ে ২০২০ সালের ১০ মে ওই শিক্ষিকার পিতা দেড় লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেন জামাই সুমনকে। কিন্তু যৌতুকের বাকি থাকা আরো দেড় লাখ টাকার জন্য আবারো মারপিট করে ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল শিক্ষিকাকে তার পিতার বাড়ি তাড়িয়ে দেন সমুন।

পিতার বাড়িতে অবস্থানকালে জানতে পারেন তাড়িয়ে দেয়ার তিনদিন আগে ১৮ এপ্রিল তাকে তালাক দেয়া হয়েছে। ফলে ওই শিক্ষিকা তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ধারায় কোতোয়ালি মডেল থানায় ২২ এপ্রিল মামলা করেছেন। ওই মামলায় পুলিশ আসামি সুমনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। কিন্তু ২৮ এপ্রিল জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে সুমন জামিনে মুক্ত হন। এরপর শিক্ষিকাকে স্ত্রী হিসে পূন:রায় গ্রহণ করে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করার জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায় ১৮ ও ১৯ মে রাত ১১টার দিকে আসামি সুমন শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রীর কাছে গিয়ে রাত্রী যাপন করে পূণ:রায় কাবিন রেজিস্ট্রি করে তার সাথে ঘরসংসার করার প্রতিশ্রুতি দেন সুমন। এসময় সুমন স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেন।

এরমধ্যে সুমনকে তালাক প্রত্যাহারের কথা বলা হলে তিনি অস্বীকার করেন। ফলে তালাক প্রত্যাহার না করে ওই শিক্ষিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করায় তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে গত ৫ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করা হয়েছিল। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দেন বিচারক। পিবিআই’র এসআই সৈয়দ রবিউল আলম পলাশ মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তুআলামত ও সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া গেলেও দুইজনের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্কটি ধর্ষণ নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ধার্য্যদিনে ওই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে আসামি বাদীর স্বামী ইয়াছিন আরাফাত সুমনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেফতারী পরোয়ানাজারীর আদেশ দিয়েছেন বিচারক।