পাঁচ কারণে নতুন জঙ্গিরা পাহাড়ে

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারকস্ফীয়া’ আস্তানা গেড়েছে পাহাড়ের গহিন অরণ্যে। পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ক্যাম্পে তরুণ জঙ্গিরা গোপনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। বিশেষ করে হিজরতের উদ্দেশ্যে যেসব তরুণ ঘর ছেড়েছেন, তাঁদের ওই ক্যাম্পে রাখা হয়। হঠাৎ কেন নতুন জঙ্গি সংগঠন পাহাড় বেছে নিল- এর অনুসন্ধান করতে গিয়ে পাঁচ কারণ বেরিয়ে আসে।

প্রশিক্ষণ প্রস্তুতিবিষয়ক জঙ্গিদের কিছু গোপন নথি বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, তারা পাহাড়ের যেখানে ক্যাম্প বানিয়েছে ওই এলাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য। জঙ্গিরা মনে করছে, গহিন বনে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে অভিযান চালানো যায় না, এমনকি ড্রোনের মাধ্যমেও ফুটেজ নেওয়া সম্ভব হয় না। এজন্য সুনির্দিষ্ট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আক্রমণ করতে পারে না। এ ছাড়া ঘন বনে রসদ সরবরাহ, অভিযান চালনা ও অভিযানস্থল থেকে ফের ক্যাম্পে ফেরাও কষ্টকর। জঙ্গিরা বিশ্বাস করে, গোপন কার্যক্রমের জন্য পাহাড় সবচেয়ে নিরাপদ ও জুতসই। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এসব তথ্য মিলেছে।

এদিকে নতুন জঙ্গি সংগঠনের দেশি-বিদেশি আর্থিক উৎস খতিয়ে দেখতে একাধিক সংস্থা কাজ করছে। র‌্যাব এরই মধ্যে জানিয়েছে, ভারী অস্ত্র কেনার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে ১৭ লাখ টাকা পঠিয়েছেন মুনতাছির আহম্মেদ বাচ্চু। তিনি ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকস্ফীয়া’র অর্থবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের পর এই তথ্য বেরিয়ে আসে। এ ছাড়া একজনের ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

এদিকে জঙ্গিদের অর্থ সরবরাহকারী হিসেবে ইব্রাহীম নামে আরও একজনের খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁর বাড়ি নারায়ণঞ্জ। দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় পলাতক তিনি। কয়েক দফায় ৩০ লাখ টাকার বেশি জঙ্গিদের কাছে পাঠিয়েছেন এই ইব্রাহীম। ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি হিসেবে পরিচিত ইব্রাহীম।

এ ছাড়া কক্সবাজারের ঈদগাহ এলাকার পূর্ব ইছাখালীর মো. শাহজাহানের ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এই টাকার বড় অংশ জঙ্গিদের কাছে গেছে। নতুন জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতা শামীন মাহফুজের সঙ্গে শাহজাহানের ঘনিষ্ঠতা ছিল। প্রায় নিয়মিত একই নম্বর থেকে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের কাছে টাকা পৌঁছে যাওয়ার কারণে অনেকে শাহজাহানের ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরকে শামীন মাহফুজের ভাবতেন। মূলত ২০১৩ সাল থেকে শাহজাহান জঙ্গিদের আর্থিক নেটওয়ার্কে ঢুকেছেন। কক্সবাজারে মোবাইল ব্যাংকিং কারবারের আড়ালে তিনি এই কাজ করে আসছেন। এ ছাড়া সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কানাডা, পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশ থেকে জঙ্গিদের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ এসেছে