আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদী কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, আশা করি দেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। সরকার একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করবে। শনিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত নটর ডেম কলেজ প্রাঙ্গণে বেসরকারি সংস্থা ‘কারিতাস বাংলাদেশ’ এর সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উদযাপনের জাতীয় পর্যায়ের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, দেশের কিছু কিছু বড় রাজনৈতিক দল আন্দোলনের হুমকি দেয়। তারা রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বর্তমান সরকার একটা নির্বাচিত সরকার। তাই দেশে শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের মৌলিক একটা দায়িত্ব। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক উন্নয়ন না হলে সামাজিক সম্প্রীতি টেকসই হবে না।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে ধর্মের নামে কিছু জঙ্গি, ধর্মান্ধ এবং অনেক ক্ষেত্রে কিছু রাজনৈতিক দল সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ায়। বর্তমান সরকার এই ধরনের মানুষ ও সংগঠনগুলোকে ঘৃণা করে। ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। কারিতাসের মতো অন্যান্য যেসব এনজিও সংগঠন আছে, তাদের সকল মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। কারিতাস যেমন মানুষের খাদ্য, বাসস্থানসহ বিভিন্ন অভাব নিয়ে কাজ করছে, তেমনি এই বিষয়গুলো সমাজ থেকে দূর করার জন্য সামাজিক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে হবে।
কারিতাস বাংলাদেশের সভাপতি জেমস রমেন বৈরাগীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্যবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজ, কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী, সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং, আরমা দত্ত, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক তপন কুমার বিশ্বাস, কারিতাসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ব্রাদার লরেন্স ডায়েস, কারিতাস এশিয়ার সভাপতি ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’রোজারিও, দাতা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধি রিচার্ড স্তোমান, ক্যাফড, জ্যাকুলিন ডি’বরগোয়িং প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন কারিতাসের নির্বাহী পরিচালক সেবাষ্টিয়ান রোজারিও।
সকালে এক আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের সুচনা হয়। এরপর জাতীয় পতাকা ও কারিতাস পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুনসহ বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উন্মুক্তকরণ, স্টল উদ্বোধন, জুবিলি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন, অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান, কারিতাস পদক প্রদান, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে তিনটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কারিতাসের কার্যক্রমের উপর বাস্তবায়িত তিনটি গবেষণা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। তৃতীয় পর্বে কারিতাস কর্মীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়নে কারিতাসের অবদান তুলে ধরা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে কারিতাসের বিভিন্ন অঞ্চল ও সেক্টরের স্টলে সংস্থাটির কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরা হয়।