নড়াইলে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলায় দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরপাচাইল গ্রামে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলায় দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর আয়োজনে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ইতনা ইউনিয়নের চৌরঙ্গী বাজার এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তব্য রাখেন-তানভীর আহমেদ রুবেল, আজিম সিকদার, নাসিম মুন্সী, ইলিয়াস মুন্সী, মিন্টু ফকির, মিরাজ মুন্সী, দিপু মুন্সী, ইমানুর লস্কার, নান্টু মুন্সী, রতনা খানমসহ অনেকে।

 

বক্তারা বলেন, গত ২৩ মার্চ নড়াইলের ইতনা ইউনিয়নের চরপাচাইল গ্রামের আহাদ আলী খান (৫৭) হৃদরোগে বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আহাদ আলীর বড় ভাই আজাদ আলী খান প্রায় আট মাস পর গত ১ ডিসেম্বর নড়াইলের আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় চরপাচাইল গ্রামের মিরাজ মুন্সি (৩৫), ইরান মুন্সী (২৭), নাসিম মুন্সি (৫৫) ও রত্না খানমকে (২৫) আসামি করা হয়েছে। মামলা নং এম.পি-১২৭/২২ তারিখ ১/১২/২০২২। বিষয়টি তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালত লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রতিবেদন দেয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন।

 

বক্তারা আরো বলেন, আজাদ আলী খান গ্রামের সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ অশান্ত করতে এ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া আজাদ আলী খানের কাছে মিরাজ মুন্সি, ইরান মুন্সী ও নাসিম মুন্সির মাতুল সম্পত্তি (মায়ের সম্পত্তি) দাবি করায় চক্রান্ত করে এ মামলা দায়ের করেন তিনি (আজাদ)।

 

মিরাজ মুন্সিসহ তার দুই ভাই বলেন, প্রকৃতপক্ষে আজাদ আলী খান আমাদের সম্পত্তি (মাতুল সম্পত্তি) থেকে বঞ্চিত করার জন্য ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অপচেষ্টা করছেন। আহাদ আলী খানের মৃত্যুর পর তার ভাই আজাদ আলী কোনো অভিযোগ করেননি।

ময়নাতদন্ত ছাড়াই আহাদ আলীর দাফন হয়েছে। অথচ মৃত্যুর আট মাস পর ষড়যন্ত্র করে আদালতে এ মামলা দিয়েছেন।

 

এছাড়া মামলায় ২ নম্বর স্বাক্ষী করা হয়েছে ইতনা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার ফায়েক খানকে। আহাদ আলীর মৃত্যুর বিষয়ে ইউপি মেম্বার ফায়েক খান অবগত থাকলেও মামলার বাদী আজাদ আলীর খানের সঙ্গে যোগসাজশে গ্রামের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে এ ধরণের হয়রানিমূলক মামলা করেছেন।

 

এদিকে, হত্যা মামলা দায়েরের পর গত ১৮ ডিসেম্বর আজাদ আলী খান বাদী হয়ে আদালতে সাতজনের নামে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় নাসিম মুন্সী, মিজান মুন্সী, মিরাজ মুন্সী, ইরান মুন্সী, চম্পা বেগম, রতনা খানম ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নয়ন মুন্সীকে (২০) আসামি করা হয়েছে।

 

ভুক্তভোগীরা বলেন, আশা করছি পুলিশ প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক প্রতিবেদন দিবে। গ্রামের শান্ত-শৃঙ্খলা বজায় রাখবে। আমরা হয়রানিমূলক মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

 

এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, আট মাস আগের ঘটনায় হঠাৎ করে বাদী হত্যা মামলা দায়ের করেছেন কেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক প্রতিবদন দেয়া হবে। পুলিশ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।