যশোরে শিক্ষার্থীকে ডেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মেলামেশার অভিযোগে মামলা

সদর উপজেলার ১২ নং ফতেপুর ইউনিয়নের ভগবতীতলা গ্রামে এক মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে কৌশলে ডেকে স্বাক্ষর নিয়ে বিয়ের কথা বলে অপহরণ ও ধর্ষনের অভিযোগে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর পিতার মামলাটি সোমবার দিবাগত গভীর রাতেম গ্রহন করেন। মামলায় আসামী করেছেন, নড়াইল জেলার সদর উপজেলার কাজদিয়া গ্রামের ইসমাইলের ছেলে হাবিবুর রহমান, একই গ্রামের ছোবদুল সরদারের ছেলে ইসমাইল, নড়াইল সদর উপজেলার বাহিরগ্রামের নওয়াব আলী খন্দকারের ছেলে বাহির গ্রাম হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক রবিউল ইসলাম,যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া আফরা ঘাটপাড়া গ্রামের মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে ইসমাইল ও সদর উপজেলার ভগবতীতলার গোলাম হোসেনের ছেলে কাশেম সরদার।

মামলায় বাদি উল্লেখ করেন,বাদি রাজ মিস্ত্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। বাদির নাবালিকা মেয়ে বর্তমানে স্থানীয় হোগলা ডাঙ্গা শাহ এস বি দাখিল মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত এবং দাখিল পরীক্ষার্থী। যার বর্তমান বয়স ১৬। বাদির উক্ত মেয়ে মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে অনেক দিন যাবত অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় আসামী হাবিবুর রহমান বাদির মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দিয়ে আসতে থাকে। বাদি উহা অবগত হয়ে আসামীদেরকে নিষেধ করলে আসামীরা কোন প্রকার নিবৃত থাকে না।

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বরসকাল ৯ টায় হাবিবুর রহমান ও ইসমাইল বাদির মেয়েকে ভূল বুঝিয়ে বাদির বাড়ি হতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বাদির মেয়েকে ডেকে নিয়ে যায়। পর দিন ২৪ ডিসেম্বর সকাল ৯ টায় বাদির মেয়ে বাড়িতে আসলে জিজ্ঞাসাবাদে বাদির মেয়ে তার মামা (আসামী ইসমাইলের) বাড়িতে গেছে বলে জানায়। ওই ঘটনার পর বাদির মেয়ের কথা বার্তা অসংলগ্ন বুঝে ও জেনে বাদি তার মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদে বাদির মেয়ে জানায় গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারী দুপুর ২ টায় অন্য আসামীদের সহায়তায় হাবিবুর রহমান বাদির মেয়েকে প্রভাবিত করে ও ভূল বুঝিয়ে তার বাড়িতে কৌশলে বাদির মেয়েকে ডেকে নিয়ে কয়েকটি কাগজে বাদির মেয়ের সই নিয়ে তাকে হাবিবুর রহমান সই করে।

আসামী রবিউল ইসলাম নিজেকে ম্যারেজ রেজিষ্ট্রার পরিচয় দিয়ে হাবিবুর রহমানর সাথে বাদির মেয়ের বিয়ে পড়াইয়ে দেয়। উক্ত দিন হতে মাঝে মধ্যে অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় হাবিবুর রহমান বাদির মেয়েকে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে স্বামী স্ত্রীর ন্যায় প্রলুব্ধ করে অপ্রাপ্ত বয়স্কা বাদির মেয়ের সাথে সহবাস করে আসতে থাকে। একই ভাবে গত ২৩ ডিসেম্বর রাত্রে হাবিবুর রহমানের বসত বাড়িতে বাদির মেয়ের সাথে হাবিবুর রহমান যৌন সংগম করেছে এবং সকালে বাদির মেয়েকে তার পিতার বাড়িতে পাঠায়ে দেয়। এই বিষয় ইসমাইলের নিকট জিজ্ঞাসাবাদে সে অন্যান্য আসামীদেরকে বাদির বাড়িতে ডেকে এনে বিষয়টি সুরাহা করবে জানায়। সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারী বিকেল ৪ টার সময় ইসমাইল অন্যান্য আসামীদেরকে বাদির বাড়িতে ডেকে আনেন।

সকল আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনা স্বীকার করে জানায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারী বাদির মেয়েকে হাবিবুর রহমান বিয়ে করেছে। রবিউল ইসলাম উক্ত বিয়ে পড়াইয়েছে এবং কাগজপত্র প্রস্তুত করেছে।

বিয়ে বৈধ দাবি করে তারা স্বামীস্ত্রী ন্যায় মেলামেশা করেছে বলে আসামীরা প্রকাশ্যে জানায়। রবিউল ইসলাম বিয়ের কাগজ পরে দেবে বলে জানায়। অথচ বাদিকে অদ্যবদি কোন কাগজপত্র দেয়নি। হাবিবুর রহমান অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় বাদির মেয়েকে ভূল বুঝিয়ে অবৈধভাবে যৌন সংগম করে আসতে থাকে। বাদি থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা হিসেবে গ্রহন না করায় বাদি আদালতে স্মরনাপন্ন হন।আদালতের নির্দেশে কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনা মামলা হিসেবে গ্রহন করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মঙ্গলবার ৩১জানুয়ারী বিকেলে বাদির মেয়ের ২২ ধারা জবানবন্দি আদালতে গ্রহন করা হয়েছে। তকে আসামীরা গ্রেফতার হয়নি।