৬ আসনে উপনির্বাচনের ভোট চলছে

বিএনপির ছয় এমপির পদত্যাগে শূন্য হওয়া ছয় আসনে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ৮৬৭টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ চলবে।

বর্তমান সংসদের মেয়াদ রয়েছে এক বছরেরও কম। কিন্তু উপনির্বাচন ঘিরে তৈরি হয়েছে জাতীয় রাজনীতির নানা মেরূকরণ। আওয়ামী লীগ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ এবং বগুড়া-৬ আসনে দলীয় প্রার্থী দিলেও ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টিকে ঠাকুরগাঁও-৩ এবং জাসদকে (ইনু) বগুড়া-৪ আসনে ছাড় দিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রার্থী না দিলেও সেখানে বিএনপির পদত্যাগী এমপি উকিল আবদুস সাত্তারকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রতিটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছেন।

এদিকে বিএনপি এই উপনির্বাচন বর্জন করলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে অনেকটা সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে। উকিল আবদুস সাত্তারকে ঠেকাতে আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বহিস্কৃত নেতা আবু আসিফ আহমেদকে প্রার্থী করা হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। অন্য পাঁচ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী।

ভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার বলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়নি। ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার এডুকেশন যথেষ্ট করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে সুন্দর ভোট হবে।

নির্বাচনী এলাকাগুলোর বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে বিজিবি ও পুলিশ। ভোটারদের মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে তেমন উত্তাপ দেখা যাচ্ছে না। ফলে আশানুরূপ ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের মধ্যে। ছয় আসনে ভোটকেন্দ্র ৮৬৭টি। ভোট কক্ষ ৫ হাজার ৮৯৮টি। ভোটার ২২ লাখ ৫৪ হাজার ২১৭ জন। ছয়টি আসনে ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে ভোটের একদিন আগেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, শুক্রবার রাত থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান গতকাল নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে বলেন, পারিপার্শ্বিক যে কথাগুলো আসছে, যেগুলো ভাইরাল হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে প্রার্থী আত্মগোপনে আছেন। আর প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় ভোটের মাঠে নতুন মেরুকরণ হবে না।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের জিয়াউর রহমান, স্বতন্ত্র মোহাম্মদ আলী সরকার, স্বতন্ত্র খুরশিদ আলম বাচ্চু, জাতীয় পার্টির আবদুর রাজ্জাক, জাকের পার্টির গোলাম মোস্তফা ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) নবীউল ইসলাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের আবদুল ওদুদ, স্বতন্ত্র সামিউল হক লিটন ও বিএনএফের কামরুজ্জামান খান।

বগুড়ার দুই আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বগুড়া-৬ আসনের কাহালু উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলো। ওই উপজেলায় ৬৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টিই ঝুঁকিপূর্ণ। এই আসনের প্রার্থীরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগের রাগেবুল আহসান রিপু, জাসদের ইমদাদুল হক এমদাদ, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর, স্বতন্ত্র আবদুল মান্নান আকন্দ, গণফ্রন্টের আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম, জাকের পার্টির ফয়সাল বিন শফিক, স্বতন্ত্র মাসুদার রহমান হেলাল, স্বতন্ত্র আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম এবং সরকার বাদল। বগুড়া-৪ আসনের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- জাসদের রেজাউল করিম তানসেন, জাতীয় পার্টির মোস্তফা ফারুক, স্বতন্ত্র আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম, কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল ও মোশফিকুর রহমান কাজল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া, জাতীয় পার্টির আবদুল হামিদ ভাসানী, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল, অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও আবু আসিফ আহমেদ ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন।