আগের সীমানা বহাল রেখেই খসড়া প্রকাশ করতে যাচ্ছে ইসি

জাতীয় সংসদের সীমানা পুনর্নির্ধারণে ৩০০ আসনের বিদ্যমান সীমানাকেই খসড়া হিসেবে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সীমানায় কেউ পরিবর্তন চাইলে তার ওপরে দাবি আপত্তি উত্থাপনের সুযোগ রাখা হবে। আগামী সপ্তাহে এ খসড়া প্রকাশ করা হবে। আপত্তিগুলো শুনানীর মাধ্যমে নিস্পত্তি করেই চূড়ান্ত করা হবে সংসদীয় আসনের সীমানা।

মঙ্গলবার ইসির বৈঠক শেষে কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান। এর আগে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক সূত্র জানায়, জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়ে মঙ্গলবারের বৈঠকে আসনভিত্তিক জনসংখ্যার বিন্যাস দেখিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। কিন্তু এই হিসেবে ব্যাপক গরমিল থাকায় কমিশন তা গ্রহণ করেনি। আগেরদিন সোমবার অবশ্য পরিসংখ্যান ব্যুরোর পক্ষ থেকে ইসির সঙ্গে যোগাযোগ করে আজকালের মধ্যে প্রয়োজনীয় পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরবরাহের আশ্বাস দেন। এ কারণে কমিশন সভায় মঙ্গলবারের খসড়া প্রস্তাব নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

জানা যায়, সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত হওয়ার আগে এ সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা ও বিধিমালা প্রণয়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। যদিও এ সংক্রান্ত নতুন আইনের আওতায় বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা ইসিকে দেওয়া হয়েছে। এর আগে সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা কমিশনকে অনুসরন করতে যাচ্ছে বর্তমান কমিশন।

মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে কমিশন সভার পর ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সীমানা যা ছিল, তা নিয়ে খসড়া প্রকাশ করা হবে চলতি মাসে। বিজ্ঞপ্তিতে দাবি আপত্তির জন্য একটা সময় নির্ধারণ করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেসব দাবি আপত্তি আসবে, সেগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে অনেকেই নিজ উদ্যোগে দাবি-আপত্তির আবেদন দিয়েছেন জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, প্রায় ২০ থেকে ২৫টি আবেদন এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে সমস্ত আবেদন পড়বে, সেগুলো নিয়ে শুনানি করে বিধি বিধানের আলোকে চূড়ান্ত আসন সীমানা ঘোষণা করা হবে।

আগামী নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসন সীমানায় কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা জানতে চাইলে জাহাংগীর আলম বলেন, বিষয়টি প্রাপ্ত আবেদনের সংখ্যার ওপর নির্ভর করবে আমরা আগে খসড়া প্রকাশ করব। এরপরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে আবেদনগুলো আসবে, সেই আপত্তি এবং ইতোমধ্যে নিজ থেকে যে আবেদনগুলো পড়েছে, সেগুলো শুনানি করে আমরা বলতে পারব, আসলে কয়টায় কী হয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, পূর্ববর্তী সময়ে যেভাবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে, দ্বাদশ নির্বাচনে সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে, অর্থাৎ এখন যেটা আছে, সেটা দিয়েই আমরা খসড়া প্রকাশ করব। এরপর কারও যদি কোনো আপত্তি থাকে, সব আবেদনের শুনানি হবে। এরপর চূড়ান্ত হবে কয়টা আসনের সীমানা পরিবর্তন হচ্ছে। খসড়া কবে নাগাদ প্রকাশ করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্রুতই প্রকাশ করা হবে। এটা আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই করে দেব। বাস্তবতা এবং আইনের বিষয়টাও তাই। আগে তো মানুষকে জানাতে হবে। তারপর তাদের কোনো আপত্তি থাকলে তার ওপর শুনানি হবে।