ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে আটক কর কর্মকর্তা

ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সদস্যদের কাছে হাতেনাতে আটক হয়েছেন রাজশাহী আঞ্চলিক কর অফিসের উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভুইয়া। আজ মঙ্গলবার আটকের পর মহিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে অফিসের কর্মীরা দুদক সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে হাতাহাতিতে জড়ায়।
দুদকের দাবি, হামলায় তাদের পাঁচ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। তবে আটকের পর মহিবুল ইসলাম ভূইয়া দাবি করেছেন, তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

দুদক জানিয়েছে, রাজশাহীর মাদারল্যান্ড ক্লিনিকের মালিক এবং ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা সিদ্দীকার বিরুদ্ধে মহিবুল ২৬ কোটি টাকার আয়কর ফাঁকির অভিযোগ আনেন। পরে ডা. ফাতেমাকে অভিযোগ থেকে নিস্তার দিতে ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন মহিবুল। ৫০ লাখ টাকা পরে দেওয়ার শর্তে মঙ্গলবার প্রথম কিস্তির ১০ লাখ টাকা নিয়ে মহিবুলের কক্ষে যান ডা. ফাতেমা। তবে ডা. ফাতেমা বিষয়টি আগেই দুদককে জানিয়ে রাখেন।

এ সময় সাদা পোষাকে তার সঙ্গী হন দুদকের কয়েকজন কর্মকর্তা। ১০ লাখ টাকা হাতে পেয়ে মহিবুল তার ড্রয়ারে রেখে দেন। এরপর দুদক দরজা বন্ধ করে মহিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। একপর্যায়ে মহিবুল চিৎকার শুরু করলে আয়কর বিভাগের কর্মীরা দরজা ভেঙে দুদক সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে বিকেল ৩টার দিকে মহিবুলকে দুদকের দল আটক করে তাদের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

যাওয়ার সময় মহিবুল ইসলাম ভুইয়া বলতে থাকেন ‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ড্রয়ারে আমি টাকা রাখিনি। তারাই টাকা দিয়ে ফাঁসিয়েছে।’

এ ব্যাপারে ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা বলেন, ‘মহিবুল ইসলাম আমার ৫ বছরের আয়কর নথি ফের চালু করার হুমকি দিচ্ছিল। একপর্যায়ে তিনি ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ ঘটনার সব প্রমাণ আমার কাছে আছে।’

দুদকের রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, মহিবুল ইসলামকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় আয়কর অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হামলা চালায়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে আমরা পুলিশে খবর দেই। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত পাঁচ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। মহিবুলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

এ ব্যাপারে রাজশাহী আঞ্চলিক কর কমিশনার মো. শাহ আলী বলেন, ‘দুদক সদস্যদের আমি সবরকম সহযোগিতা করেছি। অফিসে ভাঙচুর বা মারামারির বিষয়ে আমি অবগত নই। শুনেছি, মহিবুল ইসলাম এক চিকিৎসকের ২৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির বিষয়ে কাজ করছিলেন। দুদক তাকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আটক করেছে। বিষয়টি আয়কর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’