শহরের বকচর ইসরাক সু-কোম্পানীর কারখানার সেলসম্যান ফাহিম হোসেন (১৮) কে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সিটি কলেজপাড়া গেটের সামনে থেকে অবৈধভাবে পথরোধ করে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। পরে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ হাজার টাক নেওয়ার পর পুলিশ বাপ্পি নামে এক সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে।
এ ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মঙ্গলবার ১৮ এপ্রিল বিকেলে মামলা হয়েছে। বাপ্পি যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া আমতলার হামিদের ছেলে। মামলাটি করেছেন, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বল্লা (নদীর ধার) হানিফ আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম অনিক। মামলায় আসামী করেছেন, বাপ্পি ছাড়াও একই এলাকার আব্দুর রশিদ ওরফে কান কাটা রশিদের ছেলে আরাফাত শাহরিয়ার রাব্বিসহ অজ্ঞাতনামা ২জন।
মামলায় আরিফুল ইসলাম অনিক উল্লেখ করেন, তার আপন ছোট ভাই ফাহিম হোসেন বকচর ইসরাক সু-কোম্পানীর কারখানায় সেলসম্যান হিসেবে কাজ করে। গত ১৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১ টার সময় বাদির ছোট ভাই উক্ত কোম্পানীর কারখানা থেকে বাড়িতে আসার সময় সিটি কলেজপাড়া এলাকা দিয়ে পায়ে হেটে আসার পথিমধ্যে রাত পৌনে ১২ টায় সিটি কলেজপাড়া গেটের সামনে পৌছালে বাপ্পি ও আরাফাত শাহরিয়ার রাব্বিসহ তাদের অজ্ঞাতনামা ২জন আসামী বাদির ভাইকে দেখে অবৈধভাবে পথরোধ করে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং নির্মানাধীন ভবনের মধ্যে নিয়ে আটক করে রাখে।
এক পর্যায় বাপ্পি ফাহিম হোসেনের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। ফাহিম চাঁদার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আসামীগন বাদির ভাইকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে এবং দাবিকৃত ২০ হাজার টাকা দিতে বললে ফাহিম হোসেন তার নিকট টাকা নাই বলে জানালে বাপ্পি ফাহিম হোসেনকে এলোপাতাড়ীভাবে মারপিট করে ফোলা জখম করে। সন্ত্রাসীরা ফাহিম হোসেনের মোবাইল নাম্বার থেকে তার বসের নাম্বারে ফোন দিয়ে ফাহিম হোসেনের মাধ্যমে তার বসের কাছে চাঁদা চাই। এক পর্যায় ফাহিম হোসেনের বস বিশ^াস করে ফাহিম হোসেনের ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে ৫ হাজার টাকা সেন্ড করে।
কিন্ত বাদির ভাইকে আসামীরা দাবীবৃত চাঁদার আরো ১৫ হাজার টাকা না দিলে ছেড়ে দিবে না বলে হুমকী ধামকী প্রদান করতে থাকে। পরবর্তীতে বাদির ভাই বাড়িতে না আসায় বাদিসহ তার পরিবারের লোকজন নিকট আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে খোঁজাখুজি করতে থাকে। ফাহিম হোসেনকে না পেয়ে ১৭ এপ্রিল যশোর কোতয়ালি থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। এক পর্যায় ১৭ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৬ টায় বাদির ছোট ভাই আসামীদের নিকট হতে কৌশলে পালিয়ে আসে এবং ফাহিম হোসেন বাড়িতে এসে ঘটনার বিস্তারিত জানায় যে, ফাহিম হোসেনের মালিকের নিকট হতে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা নেওয়ার পর আমার ভাইয়ের বিকাশ নাম্বার হতে আসামীদের বিকাশ নাম্বারে নগদ ৫ হাজার টাকা সেন্ড মানি করিয়ে নেয় এবং পরবর্তীতে বাদির নিকট হতে বাদির ব্যবহৃত বিকাশ নাম্বার হতে ১০ হাজার টাকা নেওয়ার পর আসামীদের নাম্বারে সেন্ড করে নেয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করার পর পুলিশ সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ অপহরণকারী বাপ্পিকে গ্রেফতার করে। বুধবার ১৯ এপ্রিল তাকে আদালতে সোপর্দ করে।