ভোটে অনিয়ম হলে গাজীপুরবাসী মানবে না: জাহাঙ্গীর

‘এখন পর্যন্ত ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের ছেলে ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

একইসঙ্গে তিনি বললেন, ভোটে কোন অনিয়ম হলে গাজীপুরবাসী মানবে না।বিকাল ৪টা পর্যন্ত যেন ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হয়। কোনোভাবেই যেন সিসি ক্যামেরা ও ইভিএম মেশিন টেম্পারিং করা না হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মেয়রপ্রার্থী জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ৪৮০ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। কিছু কেন্দ্রে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তবে এতে কিছু যায় আসে না।

তিনি বলেন, আমাদের সব এজেন্ট কেন্দ্রে গেছে। কিছু এজেন্টকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের এজেন্ট তারপরও কেন্দ্রে ঢুকেছে। টঙ্গীতে কিছু জায়গায় এটা করেছে। আমরা আরও তথ্য নিচ্ছি।

গাজীপুরবাসী টেবিল ঘড়ি মার্কার প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে ভোট দিতে উদগ্রীব জানিয়ে তিনি বলেন, মা, ছেলে ও গাজীপুরবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছে আমার মা জায়েদা খাতুনকে ভোট দিতে।

শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরকার ও নির্বাচন সুষ্ঠু ভোটের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা শেষ পর্যন্ত দেখব, আমরা ভোটের মাঠে আছি। সর্বশেষ পর্যন্ত দেখব, কোথাও কোনো কারচুপি হয়েছে কী না!

ভেট সুষ্ঠু হলে যেকোন ফল মেনে নেবেন জানিয়ে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা ভোটের ফলকে স্বাগত জানাব এবং ভালো ভোটের জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ দেব। আর কোন অনিয়ম হলে গাজীপুরবাসী তা মেনে নেবে না। এখন পর্যন্ত যে ভোট হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।

ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসার অনুরোধ করে জাহাঙ্গীর বলেন, আপনারা কেন্দ্রে এসে ভোট দেন। এই শহর আপনাদের, ভোটের মালিক আপনারা। কোনো পেশি শক্তি যেন ভোট নষ্ট না করতে পারে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে কেউ বাধা দিয়ে ভোট নষ্ট করতে পারবে না।

নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৮ প্রার্থী হলেন হলেন- নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ।
এছাড়াও স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রসঙ্গত, ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। দ্বিতীয় সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৬ জুন সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইলেও পাননি জাহাঙ্গীর আলম। তারপর নির্বাচন থেকে মৌখিকভাবে সরে গেলেও নাম থাকে ব্যালেট পেপারে, ভোট পান তিন হাজারের মতো।

তবে পরের নির্বাচনেই পেয়ে যান দলীয় মনোনয়ন এবং বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বহিষ্কার হন দল থেকে, বাতিল হয় মেয়র পদ।

পরবর্তীতে দলীয় বহিষ্কারাদেশ উঠলেও ফিরে পাননি মেয়র পদ।

আর এবারের তৃতীয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হওয়ার পরেও নির্বাচনে প্রার্থী হন। কিন্তু ঋণখেলাপির দায়ে বাতিল হয় প্রার্থিতা।

তবে নিজের মাকেও প্রার্থী করেন নির্বাচনে এবং তার প্রার্থিতা টিকে গেলে মায়ের পক্ষে নামেন নির্বাচনী প্রচারে।

দলীয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে মায়ের পক্ষে প্রচারে নেমে এবার আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হন বহুল আলোচিত সমালোচিত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।