সিলেটে নীরব ভোটারদের ওপর নির্ভর করছে আ.লীগের জয়-পরাজয়

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জয়-পরাজয় অনেকটা নীরব ভোটারদের ওপর নির্ভর করছে। নির্বাচন থেকে বিএনপি সরে গেলেও নীরব দলীয় কর্মী-সমর্থকরা জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন। বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট দিতে গিয়ে তারা মেয়র পদেও ভোট দিতে পারেন বলে নানা হিসাবনিকাশ চলছে। তাই তাদের ভোট টানতে মেয়রপ্রার্থীরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

বিএনপির নীরব ভোট টানতে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তৎপর হয়ে উঠেছেন। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অনুসারীদের সমর্থন পেতে আনোয়ারুজ্জামান তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তবে ভোটের ব্যাপারে কেউই মুখ খুলছেন না। তারা বলছেন সৌজন্য সাক্ষাতের কথা। রোববার আরিফুল হকের কুমারপাড়ার বাসায় যান আনোয়ারুজ্জামান। এ সময় আরিফ ও তার স্ত্রী শ্যামা হক চৌধুরী তাকে স্বাগত জানান। আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি-বিএনপির ভোট নৌকায় চলে আসতে পারে। এদিকে একই দিন আরিফুল হকের বাসায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল দলবল নিয়ে হাজির হন। এরপর থেকে নগরজুড়ে আলোচনা চলছে। বর্তমানে সিলেট আওয়ামী লীগে প্রকাশ্যে বিরোধ না থাকলেও বিভক্তি রয়েছে। আর এ বিভক্তিই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের জন্য কাল হয়েছিল। দলাদলি ও কোন্দলে ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে তিনি হেরে যান। এর আগে ২০১৩ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল। এবার যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয়, এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সতর্ক। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়াও সাধারণ ভোটাররা নৌকায় ভোট দেবেন। সিটি নির্বাচনে তরুণ ভোটাররা ভোট উৎসবে মেতে উঠবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার থেকে আমরা আনুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচার শুরু করব।

এদিকে, লাঙ্গলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ক্রমেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। দলীয় সমর্থনের পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের তিনি কাছে টানার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, আওয়ামীবিরোধী ভোট আমি পাব। এমনকি আওয়ামী লীগের কিছু ভোটও আমি পাব।

নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং লাঙ্গলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার তাদের নোটিশ দেওয়া হয়। রিটার্নিং অফিসার ফয়সল কাদির স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রচার শুরু করতে পারবে না। ২ জুন প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করা যাবে। কিন্তু নির্বাচনি আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে নির্বাচনি প্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানাতে তিন কার্যদিবসে কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রতীক বরাদ্দের আগে মেয়রপ্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ব্যানার-ফেস্টুন সরানোর নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তারা তা আমলে নিচ্ছেন না।