ডেঙ্গু রোগীর যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত

ডেঙ্গু হলে তীব্র জ্বর দেখা দেয়, যার ফলে ক্ষুধামন্দা বা বমি বমি ভাব বা বমিও হয়ে থাকে, ফলে খাওয়াটা খুব কষ্টকর হয়ে যায়। তাই রোগের প্রাথমিক ধাপে তরল খাবার গ্রহণ করাটাই ভালো। শক্ত খাবারের তুলনায় শরীর এ খাবার সহজে গ্রহণ করতে পারে। তরল খাবার গ্রহণ করলে শরীর থেকে চলে যাওয়া পানির শূন্যস্থান পূরণ হতে পারে এবং একই সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

রোগীর অবস্থা একটু উন্নতির দিকে থাকলে তরল খাবাবের পাশাপাশি একটু সেমি সলিড এবং মাঝারি ঘন খাবার রোগীর খাদ্যতালিকায় যুক্ত করা যেতে পারে। এ সময় সহজে হজম যোগ্য খাবার যেমন-দইচিড়া, কলা, গরম ভাত এবং মুরগির পাতলা ঝোল, সেদ্ধ আলু, সেদ্ধ শাকসবজি, পেঁপে, লাউ, চাল কুমড়া, ঝিঙা ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

পানি জাতীয় সবজি দিয়ে দেশি মুরগির বা শিং, মাগুর, শোল মাছের পাতলা ঝোল করা যেতে পারে অল্প তেল, মসল্লা দিয়ে। খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি-এর উৎস হিসাবে লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। ভিটামিন সি-এর উৎস হিসাবে বিভিন্ন ধরনের ফলের রস, স্যুপ এবং ডাবের পানি জাতীয় প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় পান করাতে হবে। এ জাতীয় তরলগুলো শরীরে পানি এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

এ সময় রোগীকে বেশি করে পাকা কলা, পাকা পেঁপে এবং তরমুজের মতো ফলগুলো তার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে এবং রোগী যখন ধীরে ধীরে আরও সুস্থতা লাভ করবে বা রোগী যখন আরেকটু সুস্থ হবে তখন স্বাভাবিক সময়মতো পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।

ডেঙ্গু হলে যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে-

▶ অতিরিক্ত চিনি লবণ ও তেল মসলা যুক্ত বাইরের খাবার ডেঙ্গু রোগীর জন্য কোনভাবেই প্রযোজ্য নয়।

▶ প্রক্রিয়াজাত খাবার কিংবা ক্যান বা কৌটা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

▶ আর্টিফিশিয়াল চিনিযুক্ত কোমল পানীয় বা বিভিন্ন ধরনের প্যাকেট জুস বর্জন করতে হবে। কারণ, এগুলো থেকে এলসিডি, পেটের গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে এবং সম্ভব শরীরে পিএস স্তরও নেমে যেতে পারে।

▶ অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত গুরুপাক খাবার বাদ দিতে হবে। কারণ এতে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

▶ এ সময় দুধ চা, দুধ কফি কিংবা ক্যাফিনজাতীয় খাবার ত্যাগ করা উচিত; কারণ এ সময় এমনিতেই পাকস্থলীর অবস্থা খুব নাজুক থাকে এবং হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রোগীর দ্রুত সুস্থতার জন্য পানি এবং পানীয় জাতীয় খাবার যেমন- ডাবের পানি ও বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস এবং প্লেটেলেট বাড়ে এ জাতীয় খাবার দিয়ে সুষম ও সহজপাচ্য খাদ্য তালিকাটি তৈরি করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে পরিমাণে অল্প খাবার এবং খাবার খাওয়ার অল্প একটু বিরতি দিয়ে ঘনঘন খাবারটা খাওয়াতে হবে। কারণ এ সময় রোগী খুব দুর্বল থাকে, একসঙ্গে বা এক পরিবেশনে অনেকগুলো খাবার নিতে পারে না। তাই পরিমাণের দিকে অল্প পরিমাণে কিন্তু একটু ঘন ঘন যদি খাবারটা গ্রহণ করানো হয়, তাহলে রোগী খুব দ্রুত সুস্থতা লাভ করবে।