চট্টগ্রামে পুলিশ-জামায়াত সংঘর্ষ, আটক ৩০

চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকেলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা আয়োজনকে ঘিরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। নগরের আলমাস মোড় থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ পরে নগরের ওয়াসা মোড়, কাজির দেউড়ি ও জিইসি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলাকালে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ভয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় জামায়াত-শিবিরকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গায়েবানা জানাজার আয়োজন করলেও পুলিশের বাধার মুখে শেষ মুহূর্তে স্থগিত করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার আসরের নামাজের পরে নগরের জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে সাঈদীর গায়েবানা জানাজা আদায়ের ঘোষণা দেয় জামায়াত ইসলামী। দুপুর থেকে নগরের ওয়াসা, কাজির দেউড়ি, আলমাস মোড়ে জড়ো হতে থাকেন জামায়াত ইসলামী ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। তবে আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। পূর্ব অনুমতি না নেওয়ায় জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মাঠে প্রবেশে বাধা দেয় পুলিশ। জামায়াত-শিবির কর্মীদের একাংশ আলমাস মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। স্লোগান দিতে দিতে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা সবদিক ছড়িয়ে পড়ে। তাদের একটি অংশ কাজির দেউড়ি মোড়ে অবস্থান নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। অন্যদিকে আলমাস মোড় থেকে ধাওয়া খেয়ে ওয়াসা মোড়ে জড়ো হওয়া জামায়াত-শিবিরকর্মীদের সঙ্গেও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। ধাওয়া দিয়ে জিইসি পর্যন্ত নিয়ে যায়। এ সময় জামায়াত শিবির কর্মীরা সটকে পড়েন

এ প্রসঙ্গে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘কোনো সমাবেশ ও কর্মসূচি করতে হলে পুলিশের সহযোগিতা ও অনুমতি নিতে হয়। এর বাইরে গিয়ে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, জনগণের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করি। মঙ্গলবার কোনো ধরনের কর্মসূচি, পূর্ব ঘোষণা ও পূর্ব অনুমতি ছাড়া জামায়াত-শিবিরের লোকজন এখানে সমবেত হয়ে নাশকতা করার চেষ্টা করেছে। নিরীহ মানুষ ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের পর হামলা চালিয়েছে। সেটা আমরা তাদের করতে দেয়নি।’

নগরের কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।