শৈলকুপায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গোলকনগর গ্রামে শুক্রবার বিকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবু সাঈদ বিশ্বাস (৪১) নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আবু সাঈদ বিশ্বাস ওই গ্রামের ওমর আলী বিশ্বাসের ছেলে। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। এদিকে সাঈদ বিশ্বাস নিহত হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের মফিজ ও ফারুক গ্রুপের সমর্থকরা ঢাল, ভেলা, সড়কি ও রামদা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। ভাংচুর করা হয় ২০ থেকে ২৫টি বাড়ি। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন্য। নিহত আবু সাঈদ বর্মমান চেয়ারম্যান ফারুক গ্রপের সমর্থক ছিলেন। শৈলকুপা থানার এসআই আমিরুজ্জামান জানান, মাঠে মাছ ধরা জাল হারানোকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে একই গ্রামের শাহিনের সঙ্গে আবু সাঈদের তর্ক বিতর্ক হয়। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে শাহিন ও তার লেকজন ছুরিকাঘাত করে আবু সাঈদকে হত্যা করে। সাঈদ হত্যার পর বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক গ্রপের সমর্থকরা দেশী অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ মফিজ গ্রুপের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় গোলকনগর গ্রামের হজর আলীর স্ত্রী রুবিয়া খাতুনসহ ১০জন আহত হন। তাৎক্ষনিক ভাবে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শাহীন বিশ্বাস ও বকুল কাজী নামে দুই জনকে আটক করেছে। এক ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে ৫০/৬০ জন মানুষ পুলিশের সামনেই বড় বড় রাম দা, ঢাল, ভেলা ও টেঁটা নিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে ছুটে যাচ্ছে। পুলিশ তাদের আটকানোর চেষ্টা করলেও তারা কোন বাধাই মানছে না। গ্রামবাসি রুপচাঁদ মন্ডল জানায়, নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বছরের পর বছর আওয়ামী লীগের সাবেক চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দীন ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক ব্যক্তি নিহতও হয়েছে। হাল আমলে ঢাকার বিশ্বাস বিল্ডর্সের মালিক নজরুল ইসলাম দুলাল রাজনীতির মাঠে নামলে শৈলকুপার বর্তমান এমপি আব্দুল হাই বিরোধীরা দুলাল গ্রুপে যোগদান করে। নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন এখন দুলাল গ্রপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে গ্রামবাসি জানায়।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে কঠোর অবস্থান গ্রহন করে। তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই বেশ কিছু বাড়ি ভাংচুর হয়েছে। এ ঘটনায় দুই জনকে আটক করা হয়েছে। তবে পুলিশ গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবকি দাবী করলেও এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত (শুক্রবার সন্ধ্যা ৭:১৭ মিনিটের সময়) গোলকনগর গ্রামে বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটছিল বলে সেখানকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।