গ্রাফিতিতে ঢাকা মস্কো বন্ধুত্বের নিদর্শন

পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর হবে আজ বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে প্রকল্পের আবাসিক এলাকা ‘গ্রিন সিটিতে’ সাজসাজ রব।

সিটির সীমানাপ্রাচীর ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি বা দেয়ালচিত্রের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার বন্ধুত্ব ছাড়াও এতে উঠে এসেছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা জানান, রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত ৫ হাজার রুশসহ বিদেশি নাগরিক গ্রিন সিটিতে বসবাস করছেন। তাদের উদ্যোগে তৈরি এসব দেয়ালচিত্র দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন।

গতকাল বুধবার সরেজমিন উপজেলার দিয়াড় সাহাপুর গ্রামের গ্রিন সিটিতে দেখা যায়, সাদা রং করা সীমানাপ্রাচীরগুলো রাঙানো হচ্ছে হরেক রকম দেয়ালচিত্রে। এতে দেশীয় সংস্কৃতি, ঢাকা-মস্কো সম্পর্ক ছাড়াও শিক্ষণীয় নানা বিষয় শোভা পাচ্ছে। প্রাচীরের একপাশে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, রূপপুর প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, নবায়নযোগ্য শক্তি, কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু, পাকশী ফুরফুরা শরিফ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গৌরবময় অর্জন তুলে ধরা হয়েছে। অন্যপাশে কিশোরের গাছের চারা রোপণ, বই হাতে স্কুলগামী কিশোরী, ফুল, পাখি, সূর্য, ফুলের নকশার সঙ্গে নৌকা দিয়ে আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

এসব নান্দনিক দেয়ালচিত্র অনেকেই মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করছেন। ঈশ্বরদী শহরের বেসরকারি চাকরিজীবী আলী মোহাম্মদ জানান, রাস্তা চলার সময় রাজনৈতিক পোস্টার-ব্যানারই সব সময় চোখে পড়ে। কিন্তু এখানে বিদেশিদের উদ্যোগে শিক্ষণীয় গ্রাফিতিগুলো সত্যিই মন কাড়ছে। এমন উদ্যোগ গোটা ঈশ্বরদীতে চান সাহাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আরিফুল ইসলাম।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, ‘শহর সুন্দর রাখতে নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। আশা করছি, গ্রিনসিটির সীমানাপ্রাচীরে আর কেউ পোস্টার সাঁটাবে না।’

এদিকে, গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোসাটম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইউরেনিয়াম হস্তান্তর উপলক্ষে তারা গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিষয়ে দুই সপ্তাহব্যাপী অলিম্পিয়াড করেছে। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ ছাড়া পাবনা ও ঈশ্বরদী অঞ্চলের ৩২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জুনিয়র পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় মেধার স্বাক্ষর রাখে।